জমি কেনার জন্য লোন | Jomi kenar jonno loan
জমি কেনার জন্য লোন - প্রতিটি মানুষেরই স্বপ্ন থাকে বাড়ি তৈরির জন্য জমি কিনা। আর এই স্বপ্ন একজন সাধারণ মানুষের জন্য অনেক কষ্টের। জমি কিনে বাড়ি বানানো প্রতিটি মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্ন কিন্তু নগদ টাকার অভাবে সে স্বপ্ন পূরণ হয় না।
![]() |
জমি কেনার জন্য লোন | Jomi kenar jonno loan |
বাংলাদেশের এই মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাইলেও গত কয়েক বছর থেকে বাংলাদেশে ব্যাংক শুধু বাড়ি নির্মাণের জন্য ঋণ দিত। জমি কেনার জন্য লোন কোন ব্যাংক প্রাধান্য দিত না।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের কিছু ব্যাংক জমি কেনার জন্য লোন দিয়ে যাচ্ছে। তবে সেই ক্ষেত্রে কঠিন শর্ত রয়েছে। যা বাড়ি তৈরি করার জন্য ছিল না। যাইহোক এখন থেকে আপনি আমাদের দেশে সিটি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক থেকে জমি কেনার জন্য লোন (Jomi kenar jonno loan) নিতে পারেন। বিস্তারিত জেনে নিন।
জমি কেনার জন্য লোন
![]() |
জমি কেনার জন্য লোন |
"জমি" আজকাল খুব বেদনাদায়ক একটি শব্দ। কেন সেইটা আমরা ভালো করে জানি। বাংলাদেশে, প্রায় 99% শতাংশ পরিবারকে জমি/সম্পত্তির জন্য সংগ্রাম করতে দেখা যায়। এমনকি পরিবারের অনেক ক্ষতি হয়ে যায় যেইটা বলা অনেক কষ্টের।
(Jomi kenar jonno loan) জমির জন্য লড়াই যেমন কঠিন, তেমনি নতুন জমি কেন সাধারণ মানুষের জন্য অনেক কষ্টের। (Iand insurance) জমি কিনা অনেক বিশাল একটি ব্যাপার হয়ে দাড়ায় একজন সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে দেখা যায় গ্রামের দিকের জমি গুলির দাম অনেক সস্তা। গ্রামের দিকে লাখ লাখ টাকায় অনেক ভালো ভালো জমি কিনা যায়। শহরাঞ্চলে সেই জমির দাম গ্রামের তুলনায় প্রায় 3-10 গুণ বেশি। বলা যায় কোটি টাকার উপরে।
তবে আজকাল দেখা যায়, জমি কেনা থেকে শুরু করে বাড়ি তৈরিতে খরচ হয় কোটি টাকারও বেশি।
আর আমরা ভালো করেই জানি একজন সাধারণ মানুষ/সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে এই কোটি টাকার স্বপ্ন দেখা খুবই কঠিন। এক কথায়, না। সেক্ষেত্রে একজন সাধারণ মানুষের জন্য জমি কিনা বা বাড়ি বানানো স্বপ্নের মতো।
তবে বর্তমান যোগ অন্যান্য যোগ থেকে আলাদা। এই যোগে মানুষের সামর্থ্য না থাকার পরেও অনেক বড় বড় স্বপ্ন পূরন হয়ে যায়। সুতরাং আপনি যদি একজন মধ্যবিত্ত বা সাধারণ মানুষ হন এবং আপনার জমি কেনার এবং একটি বাড়ি তৈরির স্বপ্ন থাকে তবে আপনি সেই স্বপ্নটিও পূরণ করতে পারেন ( ইনশাআল্লাহ )।
আরো পড়ুনঃ
বাংলাদেশে অনেক সাধারণ মানুষ আছে যারা জমি কিনতে চায়, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের কাছে জমি কেনার মতো নগদ টাকা নেই। আর এই বিবেচনায় বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক আপনাকে জমি কেনার জন্য ঋণ দেবে।
তবে এ কথা শুনে খুশি বা দুঃখ পাওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ এই ব্যাংকগুলো আপনাকে এমনিতে টাকা দেবে না। আপনার কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে এবং আপনাকে কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে।
এই কথাটা বলার কারন একজন অতি সাধারন মানুষের পক্ষে এই স্বপ্ন টাও হয়তো পূরন না হতে পারে। তার কিছু কারন রয়েছে যেইগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
খুশির কথা হলো আপনি জমি কেনার জন্য যেসব ব্যাংক থেকে লোন নিবেন তাদের কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের শর্তগুলো মেনে চলতে পারলে আপনি সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা লোন নিতে পারবেন। (আলহামদুলিল্লাহ)।
তাহলে জমি কেনার জন্য লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত দেখে নিন।
জমি কেনার জন্য লোন পাওয়ার যোগ্যতা | কারা জমি কেনার জন্য লোন পাবে | কিস্তিতে জমি
জমি (Land Loan) কেনার জন্য একজন ব্যক্তির কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। বিশেষ করে যে ব্যাংক (Bank) থেকে আপনি ঋণ নেবেন সেই ব্যাংকের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। একজন সাধারণ মানুষ চাইলে খুব সহজে জমি কেনার জন্য ব্যাংক ঋণ নিতে পারে না।
একজন সরকারি কর্মচারী থেকে একজন ব্যবসায়ী পর্যন্ত জমি কেনার জন্য লোন নিতে পারেন তবে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে এবং যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। আবেদনকারীর প্রথম যোগ্যতা হলো ঋণ পরিশোধের টাকা থাকা।
যারা বাংলাদেশের নাগরিক এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও নির্দিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জমি কেনার জন্য ঋণ নিতে চান তাদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।
ন্যূনতম ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল পেশার মানুষ বাংলাদেশে নির্দিষ্ট ব্যাংক থেকে জমি কেনার জন্য ঋণ নিতে পারেন। তবে ঋণ নেওয়া ব্যক্তির মাসিক আয় হতে হবে কমপক্ষে ৩৫ হাজার টাকা।
যে ব্যক্তি প্রতি মাসে ন্যূনতম ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন তিনি জমি কেনার জন্য ঋণ নিতে পারেন। যাদের আয় ৩৫ হাজার টাকার কম তারা ঋণ পাবেন না।
তবে এক্ষেত্রে জমি কেনার জন্য কত টাকা লোন পাবেন তা নির্ভর করবে ডিবিআরের (DBR) ওপর। এখন অনেকেই হয়তো বলবেন ডিবিআর (DBR) কি? DBR হল একটি প্যারামিটার যা ঋণগ্রহীতার তার মাসিক আয়ের বিপরীতে ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নির্ধারণ করে।
আরো ভালোভাবে বললে, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন, সেই ব্যক্তির ডিবিআর ৪৫% হলেও, ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই ব্যক্তিকে ঋণ দেবে না।
অন্যদিকে, অন্য একজন ব্যক্তি যার মাসিক আয় 2 লাখ টাকা কিন্তু তার ডিবিআর 60% তাকে সহজেই ব্যাংক বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ দেওয়া হবে।
এই DBR আপনার আয় এবং আপনার মাসিক খরচের উপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়। তাই যেই ব্যক্তির আয় যত বেশি হবে তার লোন / ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
জমি কেনার জন্য লোন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
যে ব্যক্তি জমি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে লোন / ঋণ নিতে চান তার নিম্নলিখিত শর্ত বা দলিল/কাগজপত্র থাকতে হবে। সুষ্ঠুভাবে জমি ক্রয়ের জন্য ঋণ নিতে হলে নিচের সব নিয়ম মেনে চলতে হবে, তারপর ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হবে।
জমি কেনার জন্য লোন (Jomi kenar jonno loan) পেতে, আপনাকে প্রথমে আপনার পরিচয় যাচাই করতে হবে, যার জন্য নিম্নলিখিত নথিগুলির প্রয়োজন। এটি মূলত ব্যাংকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে নথির/কাগজপত্র/ডকুমেন্ট এর তালিকা কমবেশি হতে পারে।
- শনাক্তকরণের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি।
- সম্প্রতি তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
- ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স (আবেদনকারী যদি ব্যবসায়ী হন)।
- আবেদনকারী চাকরিরত থাকলে অফিস থেকে সার্টিফিকেট।
- ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে একজন গ্র্যান্টেড ব্যাক্তি এবং তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ছবি অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে।
- ইউটিলিটি বিল পেপার। যেমন: গ্যাস, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট বিল ইত্যাদি।
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ বা গত ছয় মাসের নথি/কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
- যেকোন ধরনের ক্রেডিট কার্ডের ডকুমেন্টস। (ক্রেডিট কার্ড থাকে)।
জমি কেনার জন্য লোন নেওয়ার ব্যাংকের তালিকা
জমি ক্রয়ের জন্য যেসব ব্যাংক থেকে ঋণ/লোনপাওয়া যায় তার তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ
- সিটি ব্যাংক
- আইএফআইসি ব্যাংক
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
উপরের এইসব ব্যাংক ছাড়াও আপনি বাংলাদেশে আরো বিভিন্ন ব্যাংক থেকে খুব সহজে লোন নিতে পারবেন জমি কেনার জন্য।
সিটি ব্যাংক | জমি কেনার জন্য লোন
জমি ক্রয়ের জন্য ঋণ নেওয়ার জন্য আরেকটি জনপ্রিয় ব্যাংক হলো সিটি ব্যাংক। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মাত্র ৮.৭৫% বার্ষিক সুদে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা ঋণ দেবে।
আইএফআইসি ব্যাংক | জমি কেনার জন্য লোন
বেশিরভাগ গ্রাহক এই ব্যাংক থেকে হোম লোন নেন। ব্যাঙ্কের "My Home" নামে একটি পৃথক স্কিম রয়েছে যা মূলত বাড়ির সম্পর্কিত আর্থিক সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য একটি নিখুঁত সমাধান। (কিস্তিতে ফ্ল্যাট ক্রয়)।
IFIC ব্যাঙ্কের আমবারী ক্রিম-এর অধীনে সর্বাধিক 2 কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পাওয়া যায়। বেতনভোগী কর্মচারীদের জন্য সর্বোচ্চ মেয়াদ 25 বছর এবং পেশাদারদের জন্য 20 বছর। এই ক্ষেত্রে ন্যূনতম প্রসেসিং ফি 00.30%।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক | জমি কেনার জন্য লোন
লোনের মাধম্যে জমি কেনার জন্য আরেকটি জনপ্রিয় ব্যাংকের নাম হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। এই ব্যাংকের সাহায্যে জমি কেনার জন্য লোন নেওয়া যাবে। সর্বোচ্চ 20 লক্ষ টাকা ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকবে এই ব্যাংকটি। সবাই একই পরিমাণ ঋণ পাবে না, এটি ডিবিআর পদ্ধতির উপর নির্ভর করবে যা আগেই বলা হয়েছে।
তারা শুধু জমি কেনার জন্য নয়, যে কোনো ধরনের বাড়ির নতুন ক্রয় বা মেরামত সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য ঋণ প্রদান করে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ১৪.৫% সুদে জমি ক্রয়ের জন্য ঋণ নিতে পারে।
জমি কেনার জন্য ৫ টি ক্যাটাগরির লোন ব্যাবহার করা হয় | সহজ কিস্তিতে লোন
- প্রবাস বন্ধুঃ দেশের বাইরে প্রবাসীরা ঋণ নিলে।
- নগর বন্ধুঃ যারা শহরাঞ্চলে জমি বা ফ্ল্যাট কিনতে চান।
- আবাসন উন্নয়নঃ বিদ্যমান ইনস্টলেশন উন্নত করতে।
- পল্লীমাঃ যারা জেলা পর্যায়ে জমি কিনতে চান।
- আবাসন মেরামতঃ আপনি আপনার ইনস্টলেশন মেরামত করার প্রয়োজন হলে।
মেয়াদ ও মাসিক কিস্তির পরিমাণ
- যদি 20 বছরের জন্য ঋণ নেওয়া হয়, তাহলে প্রতি 1 লাখ টাকার জন্য মাসিক কিস্তি 900 টাকা।
- যদি 15 বছরের জন্য ঋণ নেওয়া হয়, তাহলে প্রতি 1 লাখ টাকার জন্য মাসিক কিস্তি 1014 টাকা।
- যদি 10 বছরের জন্য ঋণ নেওয়া হয়, তাহলে প্রতি 1 লাখ টাকার জন্য মাসিক কিস্তি 1268 টাকা।
- যদি 5 বছরের জন্য ঋণ নেওয়া হয়, তাহলে প্রতি 1 লাখ টাকার জন্য মাসিক কিস্তি 2076 টাকা।
উপসংহার | জমি কেনার জন্য লোন
আমরা এই আর্টিকেলে যেটুকু সম্ভব আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি জমি কেনার জন্য লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে আপনাদের জানিয়েছি কিস্তিতে জমি কেনার নিয়ম, জমি কেনার জন্য লোন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, জমি কেনার জন্য লোন নেওয়ার ব্যাংকের তালিকা, ইত্যাদি সকল বিষয়ে। (বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক)
এই ছাড়াও আপনি জানতে পেরেছেন জমি কেনার জন্য লোন দিবে সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। যদি আপনি আরো এই সম্পর্কে আরো কিছু জানতে চান তাহলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।
সচরাচর প্রশ্ন
জমি কেনার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয়?
বর্তমানে আমাদের দেশে জমি কেনার জন্য সিটি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। এই ছাড়াও আরো বিভিন্ন ব্যাংক ও জমি কেনার জন্য লোন দেয়।
বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক?
বিনা জামানতে ঋণ দেয় কর্মসংস্থান ব্যাংক। তবে সেই ক্ষেত্রে ঋণ পাওয়ার জন্য তাদের কিছু সহজ শর্ত আছে।
কারা জমি কেনার জন্য লোন পাবে?
যারা বাংলাদেশের নাগরিক এবং ন্যূনতম ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল পেশার মানুষ জমি কেনার জন্য লোন পাবে।
জমি কেনার জন্য লোন পেতে হলে মাসিক আয় কত হতে হবে?
জমি কেনার জন্য লোন নেওয়া ব্যক্তির মাসিক আয় হতে হবে কমপক্ষে ৩৫ হাজার টাকা।