বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর দোয়া ( Baccha ke dudh khawar dua ) - বাচ্চাকে বা শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় প্রত্যেক শিশুর মায়ের উচিত সন্তানকে ভালো ভাবে দুধ খাওয়ানো। কারন একজন শিশু জন্ম হওয়ার পর তার মা বুকের দুধ পান করে বড় হয়। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত নবজাতকের জন্য মায়ের দুধই একমাত্র এবং আদর্শ খাবার। ছয় মাস পর, শিশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য মায়ের দুধের সাথে পরিপূরক খাবার প্রয়োজন। তবে দুই বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ বা কোলস্ট্রাম ছাড়া অন্য কোনো দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।
 |
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর দোয়া | Baccha ke dudh khawar dua |
যদি কোনো শিশু দুধ পান না করে এবং অনেক কান্নাকাটি করে, তার জন্য নিচে কিছু দোয়া দেওয়া হয়েছে। দোয়া গুলি কিভাবে আমল করতে হয় সব গুলির বর্ণনাও দেওয়া রয়েছে নিচে। নিচের দোয়াগুলির মাধ্যমে দুধ পান করা শুরু করবেন। সবার নিচে একটি ভিডিও দেওয়া আছে।
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর দোয়া
অনেক মা আছে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় কোন দোয়া পড়বে সেটি জানে না। যাইহোক যারা জানেন না তারা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর আগে ( বিসমিল্লাহ ) বলে নিবেন। এবং বিশেষ কিছু সূরা পড়ে ফুঁ দিবেন ( সূরা নাস, সূরা ফালাক, সূরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসী )। এই তিনটি সূরা তিনবার করে পরে বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিয়ে মালিশ করে দিবেন। আপনি চাইলে এই দোয়া গুলি একসাথে তিনবার করে পড়তে পারেন আর না হলে একবার একবার এই তিনটি সূরা পরে বাচ্চার গায়ে মালিশ করে দিবেন ( এই ভাবে তিনবার।) এই সূরা গুলি পড়লে বাচ্চা ভালোভাবে দুধ খাবে ইনশাআল্লাহ।
বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো আরেকটি দোয়া রয়েছে। যাইহোক এর আগে বলি যদি কোন বাচ্চা কান্না কাটি করে। এবং কান্না যদি খুব বেশি পরিমাণে হয় তাহলে আপনি একটি দোয়া কাগজে লিখে বাচ্চার গলায় পড়িয়ে দিলে ইনশাআল্লাহ বাচ্চা দুধ খাবে। যদি দোয়াটি কাগজে লিখে বাচ্চার গলায় দিতে না চান, তাহলে এই দোয়া টি পড়ে ফুঁ দিলেও হবে। নিচে দোয়াটি দেওয়া হলো।
 |
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর দোয়া - আমল |
যাইহোক আমরা বলব, দোয়াটি কাগজে লিখে বাচ্চার গলায় দেওয়ার দরকার নেই। এই দোয়াটি নিজে পরে বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিন তাহলেই হবে। এই আমলটি নিয়মিত করতে থাকুন তাহলে বাচ্চা বুকের দুধ খেতে পারবে এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় কান্নাকাটি করবে না ইনশাআল্লাহ।
বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর তৃতীয় দোয়াটি জেনে নিন এইখান থেকে। এই দোয়াটি শুধু বাচ্চাদের জন্য নয়। আমাদের সবার এই দোয়াটি পড়া উচিৎ যখন দুধ পান করব তখন। এই দোয়াটি তো আর বাচ্চারা পড়তে পারবে না, তাই বাচ্চার মা চাইলে এই দোয়াটি পড়তে পারেন যখন বাচ্চাকে বুকে দুধ খাওয়াবে।
দোয়াটি হলোঃ
- -اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَزِدْنَا مِنْهُ
- ''আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফিহি ওয়া যিদনা মিনহু।"
- অর্থ: হে আল্লাহ! এ দুধে আমাদেরকে বরকত দাও এবং এর চেয়েও বেশি আমাদেরকে দান কর।
এই দোয়াটির কথা বিশ্বনবি নবী বলেছেন। বিশ্বনবি বলেছেন যারা দুধ পান করেন / আল্লাহ তাআলা যাকে দুধ পান করান সে যেন তখন এই দোয়াটি পড়ে। যাইহোক বাচ্চারা তো আর এই দোয়াটি পড়তে পারবে না, তাই বাচ্চার মা চাইলে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় এই দোয়াটি পড়তে পারেন।
বুকের দুধ বৃদ্ধির দোয়া ও আমল
 |
বুকের দুধ বৃদ্ধির দোয়া ও আমল |
আজকে আমরা আপনাদের এমন একটি আমল শিখিয়ে যেই আমলটি করলে ইনশাআল্লাহ মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে। অনেক বাচ্চা আছে ঠিক মতো মায়ের দুধ খেতে পারে না। অনেক সময় মায়ের বুকের দুধ শুকিয়ে যায়, তাই বাচ্চারা টিক মতো মায়ের বুকের দুধ পাই না। তার জন্য এই আমলটি প্রতিদিন করতে হবে যতদিন বাচ্চা বড় না হয়।
তাহলে জেনে নিন প্রথম দোয়াটি / আমলটি।
এই দোয়াটি হলো পবিত্র কোরআনের সূরা নাহাল ( আয়াত - ৫০ ) এই আয়াতটি। যাইহোক, এই আয়াতটি হলোঃ
- ফী হিমা আয়না নী তাজরি য়ান
ছোট এই দোয়াটি নিয়মিত পড়তে থাকলে ইনশাআল্লাহ মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে।
নিয়মঃ যখন বাচ্চা মায়ের বুকের দুধ পাবে না, বা মায়ের বুকের দুধ শুকিয়ে যাবে তখন থেকে এই দোয়াটি প্রতিদিন পড়তে হবে, যতদিন বাচ্চা বড় না হয় অর্থাৎ যতদিন বাচ্চাকে দুধ খাওয়াবেন তত দিন।
প্রতিদিন 7 বার এই দোয়াটি পরে মায়ের বুকে ফু দিতে হবে অথবা দোয়াটি পরে হাত দিয়ে মায়ের বুকে / স্থনে মালিশ করে নিতে পারে। আশা করি বুঝেছেন। এই আমলটি যদি সঠিক ভাবে করতে চান তাহলে প্রতিদিন 7 বার করে এই দোয়াটি পরে বুকে / স্তনে মালিশ করে নিতে হবে।
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধির করার দ্বিতীয় দোয়া ও আমল টি হলোঃ
যখন মায়ের বুকের দুধ কমে যায় এবং একজন গর্ভবতী মহিলাদের ও উচিত এই আমলটি করা। এই আমলটি অনেক পরীক্ষিত একটি আমল। এই আমলটি নিয়মিত করতে পারলে ইনশাআল্লাহ মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে।
যাইহোক বন্ধুরা যেই আমলটির কথা এখন বলব সেই আমলটি আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম। আল্লাহর এই গুণবাচক নামটি হলোঃ
নিয়মঃ আল্লাহর এই নামটি পড়ে একটি গ্লাস পানি এর ভিতর সাতবার ফু দিতে হবে। এরপর ঐ পানি গুলি মধ্যে থেকে বাচ্চার মা অর্ধেক পানি খাবেন এবং বাকি অর্ধেক পানি দিয়ে তার স্তন ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন। এই আমলটি নিয়মিত করতে হবে যতদিন বাচ্চাকে দুধ খাওয়াবেন তত দিন।
ইনশাআল্লাহ, এই আমলটি করলে আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে মায়ের বুকের দুধ অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং সন্তান দুধ পান করে তৃপ্তি পাবে।
যাইহোক মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে চাইলে এই আমলের সাথে সাথে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি জেনে নিতে হবে, অর্থাৎ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
বুকের দুধ বৃদ্ধি করার উপায় | মায়ের বুকের দুধ বাড়ানোর উপায়
 |
বুকের দুধ বৃদ্ধি করার উপায় | মায়ের বুকের দুধ বাড়ানোর উপায় |
অনেক মা আছে তাদের বাচ্চা কে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়াতে পারে না। কারন মায়ের বুকের দুধ অনেক সময় শুকনা হয়ে যায়। যার ফলে বাচ্চা বুকের দুধ পাই না। আর সেই সময় অনেকে বলে বেশি বেশি লাউ, কালো জিরা, মেথি, রসুন, দারুচিনি, তুলসী, শাকসবজি ইত্যাদি খেতে। হে, এইটা ঠিক বুকের দুধ বৃদ্ধি করার জন্য এইসব খাবার খেতে হয়, তবে বেশি না। আপনি বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর আগে যেইভাবে এইসব খাবার খাইতেন, ঐভাবে খাবেন।
মায়ের বুকের দুধ বাড়াতে চাইলে উপরের এইসব খাবার খাবেন, তবে বেশি না এবং খুব বেশি পরিমাণ পানি জাতীয় খাবার খাবেন। যেমন ( শরবত, লেবুর জল, জুস, ফ্রুট জুস, ডাবের পানি, দুধ ) ইত্যাদি।
আপনি যতবার আপনার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াবেন তার আগে আপনি নিজে পানি জাতীয় কিছু খাবার খেয়ে নিবেন, সেটা হতে পারে ( জুস, ডাবের পানি, দুধ, মিনারেল ওয়াটার, লেমন ওয়াটার, ইত্যাদি )। আশা করি বুঝতে পেরেছেন, আপনি আপনার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর কমপক্ষে ৫ মিনিট আগে এইসব পানি জাতীয় খাবার খেয়ে নিবেন। এই ছাড়াও আপনি যদি সুপ খেতে পছন্দ করেন তাহলে সুপ খেয়ে নিতে পারেন।
এই ছাড়াও আপনি আপনার খাদ্য তালিকার মধ্যে চেষ্টা করবেন, দেশীয় মাছ অথবা সামুদ্রিক মাছ ভালো মানের রাখার জন্য। এবং এই মাছ গুলিকে তেলে ভাঁজবেন না এতে মাছের যে গুন সেটি ভালো থাকে। আপনি মাখিয়ে এই মাছ গুলি রান্না করার চেষ্টা করবেন। এক কথায় মাছ কে একটু জুস টাইপের রান্না করার চেষ্টা করবেন। এইভাবেই মাছ রান্না করলে ভালোমানের প্রোটিন পাবেন এতে আপনার সন্তান ও বেশি পরিমাণ দুধ পাবে। এই ছাড়াও আপনার খাদ্য তালিকায় লাউ, পটল, জিঙ্ঘা, তুলসী, শাকসবজি, ইত্যাদি রাখতে হবে। আর এই খাবার গুলির সাথে তেল কম ইউজ করার চেষ্টা করবেন।
আপনি আপনার বাচ্চাকে ভালো ভাবে দুধ খাওয়াতে চাইলে আপনি ভাতে খাওয়ার সময় যেই পরিমাণ ভাত খান, তার থেকে কিছুটা কমিয়ে দিবে ভাতের জাগায় বেশি বেশি শাকসবজি, সালাদ, ইত্যাদি খাবেন। এতে মায়ের ক্যালরি উন্নতি হয়।
বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে করনীয় | বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে দোয়া
 |
বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে করনীয় | বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাইলে দোয়া |
অনেকে বাচ্চা বুকের দুধ খেতে চাই না। এইটা সাধারন একটি বিষয়। আর এই সমস্যা টি কিছু অভ্যাসের কারণে পরিণত হয়। কারন দেখা যায় অনেকের মা আছে, চাকরি করে বা বিভিন্ন কাজে বাড়ির বাহিরে থাকে। তাই ঠিক মতো দুধ খাওয়াতে পারে না। ফলে নিয়মিত দুধ খাওয়ার বাচ্চাদের যে একটি অভ্যাস থাকে সেইটি থাকে না। তাই বাচ্চাকে চেষ্টা করতে হবে সময় দেওয়ার এবং নিয়মিত দুধ খাওয়ানোর।
যাইহোক এইবার যদি আপনার ক্ষেত্রে এইরকম না হয় অর্থাৎ একেবারে দুধ খেতে চাই না অনেক কান্নাকাটি করে তাহলে আপনার থেকে আরো কিছু উপায় জানতে হবে সেইগুলি নিচে দেওয়া হলোঃ
প্রথমে ইসলামী দিক থেকে বললে, বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর আগে বিসমিল্লাহ বলে নিবেন, এরপর বিশেষ কিছু সূরা পরে বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিবেন ( সূরা ফালাক, সূরা মাস, সূরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসী ) এই সূরা গুলি তিনবার করে পরে বাচ্চার গায়ে ফু দিবেন এবং বাচ্চার গায়ে মালিশ করে দিবেন। যাইহোক উপরে আরো বিশেষ কিছু সূরা দেওয়া হলো।
বাচ্চারা দুধ খেতে চাই না তার একটি কারন মা। বেশির ভাগই সময় মায়ের কারনে বাচ্চারা দুধ খেতে চাই না। যেমন অনেক মা আছে কাজ করার সাথে সাথে বা চাকরি থেকে ঘরে আসার সাথে সাথে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো শুরু করে দেই। এর ফলে বাচ্চারা দুধ খেতে চাই না অনেক সময়। কারন মা যখন কোন কাজ করে তখন তাদের শরীরে ঘামের কারনে গন্ধ হয়ে যায় এবং ময়লা হয়ে যায়। বিশেষ করে স্তনে। তাই বাচ্চাকে দুধ খাওয়ার আগে স্তন ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন।
এরপর অনেক মা আছে খুব তাড়াহুলা করে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায়। ফলে সঠিক ভাবে বসে এবং সঠিক পদ্ধতিতে দুধ না খাওয়ানোর কারনে বাচ্চা দুধ পাই না।
তবে নতুন মা দের ক্ষেত্রে অর্থাৎ বাচ্চার জন্ম দেওয়ার প্রায় ১ মাস মতো বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো সময় একটু কষ্ট হয়ে যায়। সেইক্ষেত্রে বাচ্চা দুধ না খাওয়া টা স্বাভাবিক। আস্তে আস্তে যখন মার অভ্যাস হয়ে যাবে কখন বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে হবে তাহলে দেখবেন বাচ্চা ভালো ভাবে দুধ খাওয়া শুরু করবে।
অনেকে আবার বাচ্চাকে জোর করিয়ে দুধ খাওয়ায় এবং মা যখন বাচ্চাকে দুধ খাওয়া তখন বাচ্চার মাথা উপর চাপ দিয়ে ধরে রাখে তখন শিশুটি খুব বিরক্তিবোধ করে ফলে বাচ্চা আর দুধ খেতে চাই না এমনকি মায়ের বুকেও যেতে চাই না।
এরপর বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার আগে কখনো চুষনী বা বোতল দিয়ে দুধ খাওয়াবেন না। তাহলে শিশু স্তনের নিপল / বুটা দিয়ে দুধ পান করতে বিরক্তি বোধ করে। ফলে বাচ্চা বোতল দিয়ে দুধ খেতে চাইবে।
শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় ভয় লাগাবেন না, এবং বিরক্ত করবেন না। এই ছাড়াও অনেকে আছে শিশুকে দুধ খাওয়ানো সময় ইনজেকশন দেই ফলে শিশু পরিবর্তীতে আর দুধ খেতে চাই না।
শিশু যখন ঘুম থাকে, যখন শিশুর জ্বর হয়, শিশুর যখন বিরক্তি লাগে, ইত্যাদি সেইক্ষেত্রে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর দরকার নেই, কারন সেই সময় শিশু দুধ খেতে চাই না।
যাইহোক উপরে যেই কথা গুলি বা টিপস গুলির সম্পর্কে আমরা বলেছি এইগুলির সাথে যদি একটাও না মিলে তাহলে আপনি ডাক্তারের সাথে দেখা করুন। যদি আপনার বাচ্চা বা শিশু খুব অদ্ভুত আচরন করে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মা যা খাবেন না | কি খেলে বুকের দুধ শুকিয়ে যায়
 |
শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মা যা খাবেন না | কি খেলে বুকের দুধ শুকিয়ে যায় |
শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মা দের অনেক সতর্ক থাকতে হবে। কারন শিশু জন্মের পর প্রায় শুধু প্রথম ৬ মাস মায়ের বুকের দুধ পান করে থাকে। ফলে মা যদি প্রথম এই ৬ মাস বাচ্চাকে ঠিকভাবে দুধ খাওয়াতে না পারে তাহলে বাচ্চার অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মা দের যেসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
তাহলে জেনে নিন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মা যা খাবেন নাঃ
- টকজাতীয় ফল।
- চা / কফি।
- পিপারমেন্ট।
- সামুদ্রিক মাছ।
- মদ্যপান।
- চকলেট।
- ভেষজ চা।
- চীনা বাদাম।
- মশলাযুক্ত খাবার।
উপরের এইসব খাবার একদম এড়িয়ে চলতে হবে যদি আপনার শিশুকে সঠিক ভাবে দুধ পান করাতে চান। তবে আপনার যদি চা খেতে বেশি ভালো লাগে বা অভ্যাস থাকে তাহলে প্রতিদিন শুধু মাত্র এক কাপ খেতে পারেন।
নোটঃ আমরা উপরে বলছিলাম সামুদ্রিক মাছ খেলে বাচ্চা দুধ বেশি পাবে, হে এইটা ঠিক। তবে একজন মা চাইলে বেশি পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ খেতে পারবেনা। এতে অনেক সমস্যা হবে।
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি | বাচ্চাদের শুয়ে দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি
 |
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি | বাচ্চাদের শুয়ে দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি |
বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর কিছু পজিশন বা নিয়ম রয়েছে। সেইগুলি হলোঃ ক্র্যাডল হোল্ড, ক্রস ক্র্যাডল হোল্ড, রাগবি হোল্ড, কাত হয়ে দুধ খাওয়ানো। এই চারটি পজিশনে দুধ খাওয়ালে শিশুরা বুকের দুধ খেতে পারে ভালোভাবে। যাইহোক আপনারা আরো ভালোভাবে জানার জন্য আমরা নিচে এই পজিশন গুলি বর্ণনা করেছি।
ক্র্যাডল হোল্ডঃ সবচাইতে আরামদায়ক পজিশনের মধ্যে রয়েছে ক্র্যাডল হোল্ড এই পজিশন টি। তবে এই পজিশনটি সিজার ব্যাক্তি না করতেও পারে। কারন তাদের অসুবিধা হতে পারে।
তারজন্য এমন ধরনের চেয়ার বা বিছানার চারপাশে বালিশ দিয়ে বসতে হবে যেইখানে হ্যান্ডেল আছে এইরকম। এবার শিশুকে এমনভাবে কোলে নিতে হবে যেন শিশুর মাথা মায়ের হাতের ওপর থাকে। শিশুর নাক হবে মায়ের স্তনবৃন্ত বা নিপল বরাবর এবং শিশুর কান, কাঁধ এবং নিতম্বের জয়েন্টগুলো হবে সরলরেখায়। মা সোজা হয়ে বসবে। যদি পা মেঝেতে না থাকে তবে সেগুলি টুলের উপরে স্থাপন করা / রাখা উচিত।
ক্রস ক্র্যাডল হোল্ডঃ বাচ্চার মা থেকে সোজা হয়ে এমন ধরনের চেয়ারে বসতে হবে যেইখানে হাতল আছে। শিশুর পেট মায়ের পেটের সাথে থাকবে। মা তার হাতের তালু দিয়ে শিশুর মাথা চেপে ধরেন এবং বিপরীত স্তনের বোঁটা মুখে দেন। এই অবস্থানটি ক্রস ভাবে হবে।
রাগবি হোল্ডঃ এই পজিশন টাও অনেক আরামদায়ক একটি পজিশন। তার জন্য প্রথমে একটি চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। এবার শিশুটিকে গলায় মনে ঘাড়ের দিকে চেপে ধরুন। শিশুর হিপ জয়েন্ট হবে মায়ের হিপ জয়েন্টের কাছে। শিশুর নাক অবশ্যই স্তনের লেবেলে থাকতে হবে।
কাত হয়ে দুধ খাওয়ানোঃ মা একপাশে শুয়ে থাকবে এবং শিশুকে তার দিকে ঘুরিয়ে দেবে। শিশুর পেট এবং মায়ের পেট সংযুক্ত বা লাগানো থাকবে। শিশুর কান, কাঁধ এবং নিতম্বের জয়েন্ট যেন সরলরেখায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি ভাঁজ করা তোয়ালে বা কোলের বালিশ শিশুর পিছনে রাখতে হবে, মায়ের কোমরকেও বালিশ দিয়ে সাপোর্ট করতে হবে।
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর দোয়া - এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোন অভিযোগ বা কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর দোয়াঃ - FAQ
স্বপ্নে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো দেখলে কি হয়?
স্বপ্নে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো দেখলে ভালো। এতে খারাপের কিছু নেই বরং খুশির খবর। অনেকে অনেক কথা বলে এই সম্পর্কে। যাইহোক স্বপ্নে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো দেখলে তার মানে তিনি ভবিষ্যতে বিয়ে করবেন, তার সন্তান হবে এইসব। এতে ভয়ের কিছু নেই। এবং এর বিশেষ কোন কারন ও নেই। এক কথায় ভালো লক্ষণ।
কিভাবে বুঝব বাচ্চা বুকের দুধ পাচ্ছে?
যদি কোন বাচ্চা দুধ খাওয়ার সময় শান্ত থাকে, কান্নাকাটি করে না , বিরক্ত করে না, ইত্যাদি লক্ষণ দেখলে মনে করবেন বাচ্চা বুকের দুধ পাচ্ছে। এই ছাড়াও যদি কোন বাচ্চা দিনে কমপক্ষে ৬ বার প্রসাব করে তাহলে বুঝে নিবেন বাচ্চা বুকের দুধ পাচ্ছে। প্রসাব এর রঙ মাঝের মধ্যে হালকা হলুদ রঙের হবে। আর কিছু কিছু শিশু ঠিকমতো দুধ পেলে ঘুমিয়ে যাই বা খেলাধুলা করে।
বাচ্চা হওয়ার আগে বুকের দুধ বের হয় কেন?
বাচ্চা হওয়ার আগে মহিলাদের বুকের দুধ বের হলে মনে করবেন সেটা একটা অসুখ। কারন বাচ্চা হওয়ার আগে মহিলাদের বুকের দুধ বের হওয়ার কথা না। তখন কিছু সাদা তরল এর মতো দুধ বের হয়ে থাকে। কিন্তু সাদা তরল মানে দুধ নয়; বরং লসিকা গ্রন্থির নিঃসরণ বা পুঁজ হতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রোল্যাক্টিন হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণেও দুধ আসতে পারে। সেজন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে মহিলা গর্ভবতী হলে ৬ মাসে অল্প পরিমাণে দুধ বের হতে পারে। 7 মাসে হালকা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক। যদি তাই হয়, ভয়ের কিছু নেই।
বাচ্চা বুকের দুধ খেতে চায় না কেন?
বাচ্চা বুকের দুধ খেতে না চাওয়ার কিছু কারন রয়েছে। কারন গুলির মধ্যে একটি কারন হলোঃ বাচ্চাকে সঠিক ভাবে দুধ খাওয়াতে না পারলে। এরপর অনেক বাচ্চার মা চাকরি করে বা বিভিন্ন কাজ করার পর বাচ্চাকে দুধ খাওয়াই তখন মায়ের স্তনে একটা ময়লার স্থর পড়তে পারে এই ছাড়াও বাচ্চার জিহ্বায় ও ময়লার স্থর পড়তে পারে তখন যদি এইগুলি পরিষ্কার করা না হয় বাচ্চা দুধ খেতে চাই না। এরপর কিছু অভ্যাসের কারনে বাচ্চারা দুধ খেতে চাই না। যাইহোক আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম উপরে।
সহবাসের পর গোসল না করে বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানো যাবে নাকি?
সহবাসের পর গোসল না করে অব্যশই বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানো যাবে। সহবাসের পর গোসল না করে যেই কাজ গুলো করা যাবে না সেইগুলি হলোঃ নামাজ পড়া নিষেধ, কোরআন স্পর্শ করা নিষেধ, তাওয়াফ করা নিষেধ, কোরআন পড়া নিষেধ, মসজিদে অবস্থান করা নিষেধ।