শ্রমের মর্যাদা রচনা | Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9

শ্রমের মর্যাদা রচনা - বন্ধুরা আমরা এই আর্টিকেলে আলোচনা করেছি (Sromer morjada bangla rochona) সম্পর্কে। আমরা সুন্ধর করে এবং খুব সহজ করে এই রচনাটি আলোচনা করার চেষ্টা করেছি ইনশাআল্লাহ আপনার সাথে শেয়ার ও করতে পেরেছি। যাইহোক বন্ধুরা শ্রমের মর্যাদা রচনাটি কেমন হলো অব্যশই কমেন্ট করে বলবেন।

শ্রমের মর্যাদা রচনা | Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9
শ্রমের মর্যাদা রচনা | Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9

শ্রমের মর্যাদা রচনা | Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9 | শ্রমের মর্যাদা রচনা ১২ পয়েন্ট

ভূমিকাঃ ইংরেজিতে একটি কথা আছে (Industry is the key to success) অর্থাৎ পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি। পরিশ্রম দ্বারা মানুষ সৌভাগ্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করতে পারে। একটি জাতির সভ্যতা বিকাশে এর অবদান। অপরিসীম। পরিশ্রমলব্ধ কার্যের কৃতকার্যতায় যে আনন্দ পাওয়া যায়, তার মত আনন্দ আর কিছুতেই পাওয়া যায় না।

আমাদের দেশে শ্রম সম্পর্কে ধারণাঃ আমাদের দেশে অনেকের ধারণা নিজে কাজ করলে আত্মসম্মানের হানি ঘটে। কিন্তু এ ভ্রান্ত ধারণা আমাদের সমাজের জন্য যে কি ক্ষতিকর তা বলে শেষ করা যায় না। কায়িক শ্রম মোটেই আত্মসম্মানের পরিপন্থী নয়; বরং তা সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভের প্রধান উপায়। আমাদের দেশের শিক্ষিত লোকেরা চাকরি প্রত্যাশী। কায়িক শ্রমকে হীন ভেবে অনেকেই তা করতে আগ্রহী নয়। তাদের মতে ক্ষেতের চাষী, কল কারখানার শ্রমিক, কুলি মজুর সকলেই ছোট লোক। অথচ দেশ ও জাতিকে রক্ষার মহান দায়িত্ব এরাই বহন করছে।

উন্নত দেশসমূহে শ্রমের মর্যাদাঃ পৃথিবীর উন্নত দেশসমূহের প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, শ্রমের প্রতি তারা বেশ মর্যাদাশীল। কোন শ্রমকেই তারা মর্যাদা হানিকর মনে করে না। ছোট বড় বলে সেখানে পার্থক্য নেই। শ্রমের প্রতি তারা বেশ আগ্রহ দেখিয়ে থাকে। শ্রম বলেই তারা উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছে। একমাত্র শ্রমের বলেই আজ জাপান, জার্মান প্রভৃতি দেশ সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করেছে। পৃথিবীর যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত বেশি উন্নত। উন্নত জাতি কাজকে কাজ বলেই জানে। অথচ আমাদের দেশে তার উল্টো।

শ্রমের আবশ্যকতাঃ মানুষের ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। অলস এবং শ্রম বিমুখ ব্যক্তিরা কোন দিন শান্তি ও আনন্দ লাভ করতে পারে না। কর্মহীন জীবন বোঝাস্বরূপ। মানুষ শ্রম ব্যতীত কোন কিছুই লাভ করতে পারে না। পার্থিব জীবনে বেঁচে থাকার জন্য যেমন শ্রমের প্রয়োজন তেমনি পরলোকের পাথেয় ও শ্রম সাপেক্ষ। ছাত্রদের ক্ষেত্রেও শ্রমের আবশ্যকতা অত্যন্ত বেশি। অলস এবং শ্রমবিমুখ ছাত্র যতই মেধাবী হোক না কেন সে জীবনে উন্নতি করতে পারে না। এ পৃথিবীতে যত বড় বড় কাজ সমাধান হয়েছে তার মূলে রয়েছে শ্রম। এ পৃথিবীর যে জাতি যত বেশি শ্রমশীল সে জাতি তত বেশি উন্নতি লাভ করেছে। কায়িক পরিশ্রম দ্বারা মানুষ জীব জগতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে এবং প্রাকৃতিক শক্তিগুলোর ওপর নিজের প্রভাব কায়েম করতে সক্ষম হয়েছে।

মানসিক উন্নতিতে শ্রমঃ মানসিক উন্নতিও শ্রম ছাড়া হয় না। কথায় আছে- ‘অকর্মণ্য মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা'। যে লোক শ্রম বিমুখ তার মনে কখনও সুচিন্তা ও সদভাব উদয় হয় না; বরং কুচিন্তার আশ্রয়স্থল হয়ে পড়ে। পরিশ্রমী ব্যক্তির মন ও মস্তিষ্ক কুক্রিয়া শক্তি থেকে সর্বদা দূরে থাকে। গণিত, সাহিত্য, দর্শন প্রভৃতি গ্রন্থ পরিশ্রম করে পাঠ করলে ও আলোচনা করলে মানসিক উন্নতি হয়।

শ্রমশীল ব্যক্তির উদাহরণঃ পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীগণের জীবনী আলোচনা করলে দেখা যায় তারা সকলেই পরিশ্রমী ছিলেন। ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মোহাম্মদ (দঃ) কঠোর পরিশ্রমী ছিলেন। তিনি নিজ হাতে সকল কাজ সমাধা করতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একজন সৈনিক। আবার মাটি কাটার কাজে সাধারণ শ্রমিকের মত কাজ করে গেছেন। তাতে তিনি লজ্জা বোধ করেননি। তিনি বলতেন, “নিজ হাতে নিজের কাজ করার মত পবিত্র জিনিস আর নেই।”

উপসংহারঃ একমাত্র শ্রমশক্তিই পারে মানুষকে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করাতে। এ শক্তিকে জাগরিত করার মাঝেই আমাদের মঙ্গল নিহিত। তাই আমাদিগকে শ্রম সম্পর্কিত সকল ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করে ও কোন শ্রমকে মর্যাদা হানিকর মনে না করে পরিশ্রমী হতে হবে। আর তার জন্যে প্রয়োজন জাতীয় ও ব্যক্তিগত জীবনে শ্রমের মর্যাদা দান।

অন্যান্য আর্টিকেল পড়ুনঃ

শ্রমের মর্যাদা বলতে কি বুঝায়? | শ্রমের মর্যাদা মানে কি?

শ্রমের মর্যাদা রচনা | Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9
শ্রমের মর্যাদা রচনা | Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9

নিজের শ্রম দ্বারা সঠিক পথে বেঁচে থাকা, অপরের কল্যাণের এবং সৃষ্টি জীবের উপকরনের জন্য যে কাজ করা হয় তাই হলো শ্রম। একজন ব্যাক্তি সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করতে পারে শ্রমশক্তির মাধম্যে। ইসলামে কোন কাজ ছোট করে দেখে না। যেকোনো কাজ নিজের এবং অন্যের জন্যে করাকে শ্রম বলে। আর এই শ্রমের যথার্ত মূল্যায়ন এবং সাফল্য হলো শ্রমের মর্যাদা।

মানসিক শ্রম কি?

বৈজ্ঞানিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ডাক্তার, অফিসের কর্মচারী শ্রেণির মানুষ যে ধরনের শ্রম দিয়ে থাকে আমরা সেই শ্রম কে বলে থাকি মানসিক শ্রম।

শারীরিক শ্রম কি?

তাঁতি, জেলে, কৃষক, মজুর, শ্রমিক শ্রেণির মানুষের শ্রম কে আমরা বলে থাকি শারীরিক শ্রম।

শ্রম কত প্রকার ও কি কি?

শ্রম দুই প্রকার। যেমনঃ পরোক্ষ শ্রম এবং প্রত্যক্ষ শ্রম। 

শ্রমিক কর্মীর জনক কে?

রবার্ট ওয়েন কে শ্রমিক কর্মীর জনক বলা হয়।

ইসলামে শ্রমের মর্যাদা | Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9

ইসলামে শ্রমের মর্যাদা গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামে বলে যে শ্রমের মর্যাদা দিতে জানে না, যে শ্রম বুজে না সে কখনো সফল হলে পারে না।

পবিত্র কোরআনে এবং হাদিস শরিফে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে শ্রমিকের অধিকার সম্পর্কে। প্রতিটা মানুষ কষ্ট করে, শ্রম করে শুধুমাত্র নিজের জীবন ঘরে তুলার জন্য। আমরা আমাদের সমাজে দেখি যে শ্রমিকের অধিকার সম্পর্কে বুজে এবং বেশি পরিমাণ কষ্ট করে, শ্রম করে তারাই সফল।

আমাদের পবিত্র কোরআনে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন নামাজ আদায় করার হলে জীবিকার্জনের জন্য তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা আল জুমআহ)।

প্রিয় বন্ধুরা এইটাই সত্য, যে ব্যাক্তি কোন কাজের জন্য যায় তার আগে আল্লাহকে অধিক স্মরণ করতে হয় এবং নামাজের সময় হলে নামাজ আদায় করে নিতে হয়। তাহলে যেকোনো কাজ খুব সহজে হয়ে যায়।

আমাদের প্রিয় সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) ও ছিলেন একজন শ্রমজীবী মানুষ। শুধু তাই নয় পৃথিবীর সর্বপ্রথম নবী হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে আরো অনেক নবী-রাসুল ও ছিলেন শ্রমজীবী মানুষ।

সবচেয়ে বড় কথা হজরত মুসা (আ.) ও ছিলেন একজন রাখাল এবং নবী হজরত আদম (আ.) ছিলেন দুনিয়ার প্রথম চাষি। এই ছাড়াও হজরত মোহাম্মদ (সা.) এবং প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) ছিলেন সৎ ব্যবসায়ী।

ব্যক্তির নিজ হাতে কাজ করা এবং সৎ ব্যবসা সবচাইতে উপার্জন উত্তম ও শ্রেষ্ঠ এইটা বলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। আল্লাহ্ আমাদের শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে জানার এবং পালন করার তোফিক দান করুন ( আমিন )।

(শ্রমের মর্যাদা রচনা) এই আর্টিকেলে কোন ভুল তথ্য থাকলে অথবা (Sromer morjada bangla rochona Class 6,7,8,9) এই রচনাটি সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে বা অভিযোগ থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরো পড়ুনঃ