খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা জানতে পারবেন এইখানে। আজকে আমরা আলোচনা করব আপনি নিয়মিত খালি পেটে আমলকি খেলে কি কি উপকার হবে আপনার। তার জন্য আর্টিকেল টি নিয়মিত দেখতে থাকুন।

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেহেতু আমরা নিচে আলোচনা করেছি আমলকি খাওয়ার উপকারিতা কি? তাই পোস্ট টি স্কিপ করবেন না দয়া করে।

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। (khali pete amloki khawar upokarita) এই ছোট একটি ফলের অনেক গুণ। তাই আমাদের জন্য প্রতিদিন খালিপেটে আমলকি খাওয়া অনেক জরুরি। আমলকি তে রয়েছে নানা ধরনের গুণাগুন, ভিটামিন সি, পলিফেনল অ্যান্টি অক্সিডেন্টস, খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যারোটিন এবং আয়রন।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন আমলকি তে অনেক পরিমাণ গুণাগুণ রয়েছে। আমলকিতে অসংখ্য ভিটামিন রয়েছে। তাই আপনি যদি ভিটামিন পেতে চান তাহলে বেশি বেশি আমলকি খান। তবে নিয়মের বেশি না। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যদি সকালে খালি পেটে এক টুকরা বা একটি হলেও আমলকি খেলে। তাহলে জেনে নিন খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা কি?


খালি পেটে আমলকি খেলে সর্দি-কাশি থেকে এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকেও বাচা যায়। ভিটামিন সি পাওয়া যায় আমলকি থেকে। যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। খালি পেটে আমলকি খেলে চোখে ছানির ঝুঁকি কমে। দৃষ্টিশক্তি শক্তি ভালো থাকবে।


হাঁপানির সমস্যা থেকে মুক্তি দেই আমলকি। অনেক সময় ভিটামিনের অভাবে মুখের মধ্যে ঘা হয় সেই ক্ষেত্রে আমলকি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। শরীর থেকে সব দূষিত পদার্থ বাহিরে চলে আসে খালি পেটে আমলকি খেলে।


খালি পেটে বা যেকোনো সময় আমলকি খেলে চুল পড়া কমায় এবং চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে। ত্বক সুস্থ থাকে, চর্মরোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় নিয়মিত আমলকি খেলে। খালি পেটে আমলকি খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আসে।


ব্রণ এর সমস্যা, ত্বকের ভাঁজ, কালো দাগ, ইত্যাদি সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই ছাড়াও মেদ কমতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমলকির গুরুত্ব অপরিসীম। এই ছাড়াও খালি পেতে আমলকি খেলে শরীরের আরো নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার নিয়ম

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার নিয়ম
খালি পেটে আমলকি খাওয়ার নিয়ম | খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার নিয়ম জেনে নিয়ম এইখান থেকে। খালি পেটে আমলকি খাওয়ার একটি নিয়ম রয়েছে। শুধু আমলকি খেলে হবে না। তাহলে দেখে নিন কিভাবে আমলকি খেতে হয়।

তার জন্য একটি আমলকি কে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। অব্যশই খাচা আমলকি খাবেন। তারপর একটি গ্লাসে অল্প গরম পানি নিয়ে নিন এতে কাঁচা আমলকি গুলি গরম পানিতে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন।


এরপর আমলকি গুলি ছাড়া শুধু আমলকি মিশ্রিত পানি গুলি সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন। এরপর আপনি চাইলে আমলকির টুকরোগুলোও খেয়ে পেলতে পারেন।

এইভাবে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস আমলকির পানি পান করুন, দেখবেন আপনার শরীরের নানা সমস্যা এমনি এমনি মুক্তি পাচ্ছে।

প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত?

প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত এইখানে জেনে নিন। আমাদের উচিত প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ১-২ টি আমলকি খাওয়া। আমরা বলব আমলকির অনেক উপকারিতা হলেও প্রতিদিন ১-২ টির বেশী আমলকি খাওয়া উচিত না।


প্রতিদিন সকালে আপনি ঘুম থেকে উটে এক গ্লাস পানির সাথে ১ টি বা ২টি আমলকি ছোট ছোট টুকরা মিশ্রন করে পানি গুলি খাবেন। এরপর আপনার ইচ্ছা হলে যেকোনো সময় আপনি আমলকি গুলি খেতে পারেন।

এইভাবে আপনি প্রতিদিন ১-২ টি আমলকি নিয়মিত খেতে পারলে আপনার জন্য অনেক উপকার হবে। দিনে দু’একটির বেশি আমলকি খাওয়া ভালো না। তবে মাঝের মধ্যে খাওয়া যাবে। যেই বেশি খেতে ইচ্ছা হয় তাহলে।


বেশি আমলকি খাওয়া ভালো না এটা বলার কারন আমলকি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ফলে বেশি আমলকি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।

আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা | কাঁচা আমলকি খাওয়ার নিয়ম

আমলকি খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন এইখানে। প্রতিদিন ১ টি বা ২ টি আমলকি খাওয়া উচিত। অনেক মরিচ বা লবন দিয়ে আমলকি খেয়ে থাকে। এতে উপকারীতর চেয়ে অপকারিতা বেশি হবে। মরিচ বা লবন দিয়ে আমলকি খাওয়া উচিত না। আমলকি খাওয়ার নিয়ম কাঁচা আমলকি ছোট ছোট টুকরা করে এইগুলি অল্প গরম পানিতে মিশ্রন করে পানি গুলি খাওয়া। পরে আমলকির টুকরা গুলি খাওয়া।

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা জেনে নিন এইখান থেকে। আমলকি খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে। তবে আমলকি খাওয়ায় অপকারিতা চেয়ে উপকারিতা বেশি। কারন আমলকি থেকে রয়েছে অনেক গুণাগুণ। তাহলে জেনে নিন আমলকির খাওয়ার উপকারী এবং অপকারিতা সম্পর্কে।

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন এইখানে থেকে। বিশেষজ্ঞরা বলেছে, কাগজি লেবুর, পেয়ারা, এই ফল গুলির চেয়ে ৩ গুণ ও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন 'সি' রয়েছে। শুধু তাই নয় আপনি জানলে অবাক হবে আমলকিতে আপেলের চাইতে ১২০ গুণ বেশি ভিটামিন রয়েছে। এই ছাড়াও কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন 'সি' রয়েছে। তাহলে বুজতে পারতেছেন আমলকির উপকারিতা কেমন।

চুলের উপকারিতাঃ চুলের জন্য আমলকির উপকারিতা অনেক। চুলের গোড়া মজবুত করতে আমলকির গুরুত্ব অপরিসীম। চুলের বৃদ্ধিতেও আমলকি অনেক সাহায্য করে। যারা চুলের সমস্যা বেশি ভুগতেছেন তারা এখন থেকে আমলকি নিয়মিত খাবেন।


পাকা চুল প্রতিরোধ করে আমলকি। চুলের খুসকির সমস্যা দূর করে আমলকি। চুল সুন্ধর ভাবে গজাতে আমলকি সাহায্য করে।

সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করেঃ সবচাইতে কমন একটি সমস্যা সেটি হলো সর্দি কাশি। কোন ভাবেই ভালো হতে চাই না এই সর্দি কাশি। তবে আমলকি সাহায্য করবেন সর্দি কাশি থেকে মুক্তি দিতে।

সর্দি কাশি হয় আমলকি খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে যেমন; দুই চা চামচ আমলকির গুঁড়ো সামান্য মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে খুব দ্রুত সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যদি বাচ্চাদের সর্দি কাশি হয়ে থেকে সেই ক্ষেত্রে দুই বছরের বাচ্চাদের মধু খাওয়াবেন না। তার জন্য কি করতে হবে জেনে নিন এই লিঙ্কে ক্লিক করে।

মেদ কমাতে চাইলে আমলকি খানঃ হে আপনি যদি মেদ কমাতে চান তাহলে এখন থেকে নিয়মিত আমলকি খাবেন। আমলকি খুবই কার্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণে। তবে পেটের মেদ কমানোর জন্য আমলকি না আমলকির রস অথবা আমলকির পানি মিশ্রন করে খাবেন।

কিভাবে আমলকির সাথে পানি মিশ্রন করতে হয় সেইটি উপরে বলে দেওয়া হয়েছে। পেটের মেদ কমাতে চাইলে খালি পেটে আমলকির রস বা আমলকির পানি মিশ্রন খাবেন। এতে আপনার পেট ভরে যাবে এবং আপনি অন্যান্য খাবার কম খেতে চাইবেন। ফলে পেটের মেদ কমে।


পেটের মেদ কমাতে আমলকি সাহায্য করে এই কথা বলেছে পুষ্টিবিদরা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ট্যানিকের মতো অ্যাসিড আছে আমলকিতে, এই ছাড়াও উচ্চমাত্রায় ফাইবার রয়েছে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে আমলকিঃ আমলকি চোখের জন্য কতটুকু উপকারী দেখে নিন এইখান থেকে। চোখের ছানির সমস্যা বা চোখের ফোলাভাব দূর করতে সাহায্য করে আমলকি। চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যা কমাতে চাইলে আমলকি খেতে পারেন। লালচে চোখ, চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আমলকি খেতে পারেন।

ব্যথা থেকে মুক্তি পেতেঃ ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে আমলকি খেতে পারেন। শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আমলকি খান। এই ছাড়াও আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় দুর্দান্ত কাজ করে আমলকি।

আমলকির ওষুধি গুণ

এই ছাড়াই আমলকির আরো নানা উপকারিতা রয়েছে সেইগুলি এক নজরে দেখে নিনঃ

  • শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে আমলকি সাহায্য করে
  • মানসিক চাপ কমাতে আমলকি খেতে পারেন।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • আমলকির রস খেলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর হয়।
  • দাঁত শক্ত থাকে।
  • ত্বকের কালো দাগ দূর হবে।
  • বমি, কফ, ব্যথা-বেদনায় ইত্যাদি জন্য আমলকী অনেক উপকারী।
  • ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • কোলেস্টেরল লেভেলেও কম থাকে।
  • রুচি বাড়ায়।
  • বহুমূত্র রোগে আমলকি উপকারী।
  • ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে আমলকি উপকারি।

আমলকি খাওয়ার অপকারিতা | অতিরিক্ত আমলকি খেলে যে সমস্যা হতে পারে

আমলকি খাওয়ার অপকারিতা জেনে নিন এইখান থেকে। আমলকি খাওয়ার অপকারিতা বলতে যে নিয়মের বাহিরে বেশি পরিমাণ আমলকি খেয়ে থাকে তার জন্য আমলকি খাওয়া ক্ষতি। অর্থাৎ অতিরিক্ত আমলকি খেলে যে সমস্যা হবে। তাহলে জেনে নিন কতটুকু আমলকি খেতে হয় এবং অতিরিক্ত আমলকি খেলে যাদের ক্ষতি হতে পারে।

  • দিনে দুইটার বেশি আমলকি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তার কারন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে আমলকিতে।
  • সার্জারি হলে আমলকি খাওয়া ভালো না।
  • অন্তঃসত্ত্বা বা যারা বাচ্চাদের দুধ খাওয়ান এমন মায়েদের আমলকি খাওয়া উচিত নয়।
  • বেশি আমলকি খেলে হার্টের জন্য ক্ষতি।
  • বেশি আমলকি খেলে অ্যালার্জিও হতে পারে। এই ছাড়াও পেটের ব্যাথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, পাকস্থলীর কৃমি হতে পারে।
  • বেশি পরিমাণ আমলকি খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে কমে যায়।

নোটঃ আমরা বলব আপনি প্রতিদিন একটি হলেও আমলকি খাবেন এতে শরীরে জন্য অনেক ভালো, তবে দিনে দুইটির বেশি খাবেন না। মাঝের মধ্যে বেশি ইচ্ছা করলে খেতে পারেন।


গর্ভাবস্থা | বুকের দুধ খাওয়ানো সময়

গর্ভাবস্থায় এবং আপনি যদি বুকের দুধ খাওয়ান তাহলে আমলকি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং আমলার ঔষধি ব্যবহার এড়ানো উচিত। কারনঃ (বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাব)

আমলকি কি কাঁচা খাওয়া উচিত?

হ্যাঁ, আমলাকি কাঁচা খাওয়া যেতে পারে, তবে জুস আকারে বা পাউডার আকারে খেতে পারলে এটি ভিটামিন সি-এর সর্বোচ্চ উৎস এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী

আমলকি কখন খেতে হবে?

সকাল সকাল, বিশেষ করে শীতকালে যখন তাপমাত্রা কমে যায় তখন আমলকি খাওয়া উচিত। কোলন পরিষ্কার করার পাশাপাশি, এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন দূর করে এবং প্রাকৃতিক ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস। আমলা খুশকি এবং অন্যান্য ত্বকের যত্নের সমস্যাগুলির বিরুদ্ধেও কার্যকর বলে পরিচিত।

সকালে আমলকি খেলে কি হয়?

প্রতিদিন সকালে বা কারো রক্তচাপ বেড়ে গেলে আমলার রস পান করা রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা এই আর্টিকেলে কোন ভুল তথ্য থাকলে এবং আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোন অভিযোগ বা কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরো পড়ুনঃ