ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা

ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা - আমরা এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি ডিজিটাল বাংলাদেশ এই রচনাটি। এই আর্টিকেলটা উচ্চ লেভেলের স্টুডেন্ট দের জন্য। কারন এই রচনাটি অনেক বড় করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা এসএসসি অথবা এইচএসসি পরীক্ষা দিবেন তারা চাইলে এই রচনাটি শিখতে পারেন। যাইহোক এখন দেখে নিন ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনাটি।

ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা

ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা

  • ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা
  • ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা ২০০ শব্দ
  • ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা ২০২৩
  • ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা pdf
  • ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা ১৫০০ শব্দের
  • ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা ১০০০ শব্দের
  • তথ্য প্রযুক্তি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা

ডিজিটাল বাংলাদেশ

ভূমিকাঃ 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' শব্দটি আজ বহুল আলোচিত বিষয়। এর জনপ্রিয়তা বা গ্রহণযোগ্যতা এখন প্রশ্নাতীত। এটি কেবল সরকারের কর্মসূচি নয়, এটি আজ জাতির গন্তব্য। সরকার এবং রাষ্ট্রের সকল স্তরের বাইরেও সাধারণ মানুষ এই শব্দযুগল দিয়ে একটি সমৃদ্ধ দেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। এটি একদিকে জাতির উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মকে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কেবল একটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়, এটি আজ বাস্তবের কাছাকাছি এক অর্জন।

ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা

ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণাঃ ১২ ডিসেম্বর ২০০৮ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে। দলের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেন যে, বাঙালির স্বাধীনতার ৫০ বছরে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হবে। একটি উন্নত দেশ, একটি সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, একটি ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠী, রূপান্তরিত উৎপাদন ব্যবস্থা, নতুন ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি সব মিলিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন স্বপ্নটাই দেখিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ৬ ডিসেম্বর ২০০৮ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে এটি যুক্ত হয় এবং ১১ ডিসেম্বর ২০০৮ কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় সেটি অনুমোদিত হয়।

ডিজিটাল বাংলাদেশ কি?

ডিজিটাল বাংলাদেশ কীঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে সেই সুখী, সমৃদ্ধ, শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর দুর্নীতি, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ যা সকল প্রকারের বৈষম্যহীন, প্রকৃতপক্ষেই সম্পূর্ণভাবে জনগণের রাষ্ট্র এবং যার মুখ্য চালিকা শক্তি হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। এটি বাংলাদেশের জনগণের উন্নত জীবনের প্রত্যাশা, স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা। এটি বাংলাদেশের সকল মানুষের ন্যূনতম মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর প্রকৃষ্ট পন্থা। এটি একাত্তরের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের রূপকল্প। এটি বাংলাদেশের জন্য স্বপ্নোন্নত বা দরিদ্র দেশ থেকে সমৃদ্ধ ও ধনীর দেশের রূপান্তরের জন্য মাথাপিছু আয় বা জাতীয় আয় বাড়ানোর অঙ্গীকার। এটি বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সোপান।

ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য

ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যঃ ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশের বিদ্যমান সমাজকে পরিবর্তন করে আরো উন্নত, সমৃদ্ধ ও দারিদ্র্যমুক্ত করে প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে সমাজের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং সম্পদের সুষম বণ্টন ও মানুষের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা মেটানোর নিশ্চয়তা বিধান করা। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-মনস্ক, দক্ষ দুর্নীতিমুক্ত, মেধাসম্পদে সমৃদ্ধ আত্মবিশ্বাসী ও সফল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।

ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জাতীয় অগ্রাধিকার

ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জাতীয় অগ্রাধিকারঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রথম জাতীয় অঙ্গীকার হচ্ছে ডিজিটাল টুলস্ ব্যবহার করে দেশ থেকে দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করা এবং জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় পর্যায়ে অবকাঠামোগত অগ্রাধিকারে থাকতে হবে সারা দেশের সকল ঘরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারা। একই সাথে প্রতিটি ঘরকে তার বা বেতার ব্যবস্থায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় যুক্ত করা। এ ছাড়াও দেশের সকল অঞ্চলের জনগণের প্রত্যেককে ডিজিটাল যন্ত্রে সজ্জিত করাসহ ডিজিটাল ডিভাইড দূর করা।

ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচি

ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচিঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচনসহ সকল প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে প্রযুক্তির লাগসই প্রয়োগ করার একটি আধুনিক দর্শন। ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচি হলোঃ—

জনগণের রাষ্ট্র

জনগণের রাষ্ট্রঃ রাষ্ট্রটি হবে জনগণের। এই রাষ্ট্রে ডিজিটাল টুলস্ ব্যবহার করে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি মৌলিক-মানবিক সংরক্ষণসহ সকল সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার সকল প্রকারের নিশ্চয়তা থাকবে এবং ডিজিটাল মাধ্যমসহ সকল মিডিয়ায় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ জনগণের রাষ্ট্র ধারণা সংক্রান্ত সকল তথ্য প্রকাশ করতে হবে যা ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনগণ অনায়াসে পাবে।

মৌলিক চাহিদা পূরণ

মৌলিক চাহিদা পূরণঃ রাষ্ট্রকে জনগণের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা পূরণ, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা ও চিকিৎসার ন্যূনতম দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। সমাজে পেশি শক্তির প্রভাবের বদলে জ্ঞানশক্তির প্রভাব বিরাজ করবে। জনগণ যাতে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করার মতো উপার্জন করতে সক্ষম হয় তার জন্য তাকে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শেখাতে হবে এবং সেই প্রযুক্তি তার কাছে রাষ্ট্রকেই সহজলভ্য করতে হবে। দরিদ্র জনগণকে জ্ঞানকর্মী বা ডিজিটাল প্রযুক্তি কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং গ্রামে গ্রামে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি, মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক শিল্প-বাণিজ্যসহ কৃষি, শিক্ষা, টেলি যোগাযোগ ইত্যাদি খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করতে হবে। সরকার প্রদত্ত সকল সহায়তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যবস্থাপনা করতে হবে।

রাজনীতির ডিজিটাল ধারা

রাজনীতির ডিজিটাল ধারাঃ জাতীয় সংসদসহ সকল রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও ব্যবস্থা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হতে হবে। সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সকল তথ্য জনগণের কাছে প্রাপ্ত হবার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। সংসদ পরিচালনাসহ কার্যাবলি ও সকল রাজনৈতিক কর্মসূচি, রাজনৈতিক বক্তব্য, কর্মকাণ্ড ও সাংসদসহ সকল রাজনীতিকদের রাজনৈতিক জীবনাচার সংক্রান্ত সকল তথ্য উন্মুক্তভাবে সকল জনগণের জন্য প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

ডিজিটাল সরকার

ডিজিটাল সরকারঃ রাষ্ট্র পরিচালনার সরকার হবে ডিজিটাল। ডিজিটাল সরকারের কাজ করার প্রক্রিয়া হবে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল । প্রচলিত কাগজভিত্তিক, ফাইল ও ফিতাভিত্তিক সরকার ব্যবস্থার বদলে সরকার কাজ করবে নেটওয়ার্ক, ইন্টারঅ্যাকটিভ ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে। সরকারের সকল তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হতে হবে, এবং সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা প্রদানের পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনার সকল স্তরে ও সকল কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

ডিজিটাল স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার

ডিজিটাল স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারঃ কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি ইউনিয়ন ওয়ার্ডসহ জেলা-উপজেলার স্থানীয় প্রশাসন ও সকল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে যোগাযোগসহ জনগণকে সেবা প্রদান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া ডিজিটাল হতে হবে। স্থানীয় সরকারের সকল তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষিত ও প্রকাশিত হতে হবে।

ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা

ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থাঃ দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল যুগ বা জ্ঞানভিত্তিক সমাজের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে হবে। প্রতিটি নাগরিকের জন্য ডিজিটাল যন্ত্র পরিচালনা ও ব্যবহার শিক্ষার ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব হবে। দেশের প্রতিটি শিক্ষক এবং প্রতিটি শিশুর হাতে পর্যায়ক্রমে কম্পিউটার প্রদান করতে হবে। প্রতি ঘরে ও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিতে হবে ডিজিটাল যন্ত্র এবং স্বল্প বা বিনামূল্যে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। দেশের প্রতি ইঞ্চি জায়গা থেকে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে প্রবেশ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। দেশের সকল স্তরের সকল ধরনের, সকল পদ্ধতির শিক্ষা ব্যবস্থায় পাঠদানের প্রধান উপকরণ হবে ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তি। শিক্ষার ব্যবস্থাপনা ও মূল্যায়নসহ সকল কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হতে হবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ সামরিকসহ সকল বাহিনীর ক্ষেত্রে ডিজিটাল আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য ডিজিটাল অস্ত্র ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাইবার ওয়্যারফেয়ার বিষয়ে সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষিত করতে হবে এবং ডিজিটাল টুলস্ ব্যবহার করে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা করতে হবে। সাইবার অপরাধসহ সকল ধরনের অপরাধ বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং সেই সব অপরাধ থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিরাপত্তার জন্য ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করতে হবে। ব্যক্তির প্রাইভেসি রক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। 

ডিজিটাল আইন ও বিচার ব্যবস্থা

ডিজিটাল আইন ও বিচার ব্যবস্থাঃ পরিবর্তিত অবস্থার প্রেক্ষিতে সৃষ্ট নতুন ধরনের অপরাধ, সাইবার অপরাধ, সাইবার কম্যুনিকেশন, অনলাইন আদান-প্রদান, নিউ মিডিয়া, ডিজিটাল কমার্স, ডিজিটাল লাইফস্টাইল, ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং মেধা সম্পদ ইত্যাদি সকল বিষয়কে পর্যালোচনা করে অপরাধ সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যাবিধিসহ অন্যান্য সকল আইন পরিবর্তন করতে হবে। অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ডিজিটাল-সহ নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনমতো বায়োমেট্রিক্স, জিন পরীক্ষা, অপরাধীর অবস্থান নির্ণয়ের জন্য গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম, অপরাধীর ডাটাবেজ তৈরি করা ছাড়াও বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করতে হবে। আইনসমূহ অনলাইনে পাবার পাশাপাশি ডিএলআর ও অন্যান্য আইন প্রকাশনা ডিজিটাল ও অনলাইনে প্রাপ্য হতে হবে। বিচারপ্রার্থী অনলাইনে বিচার প্রার্থনা করার পাশাপাশি তার মামলা কোথায় কী অবস্থায় আছে তা যেন অনলাইনে জানতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। আইনজীবীগণ যাতে অনলাইনে তার বক্তব্য পেশ করতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে হবে।

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বদল

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বদলঃ উন্নত জীবনের জন্য চাই বর্ধিত আয়। সেটি কেবল ব্যক্তির নয়, জাতিরও। ব্যক্তির আয় বাড়লে জাতির আয় বাড়বে। আমাদেরকে ২০২১ সালের বাংলাদেশের মাথাপিছু বার্ষিক আয় দুই হাজার ডলারে উন্নীত করতে হবে। এর পাশাপাশি আয়ের উৎসও বদলাতে হবে। ধীরে ধীরে জিডিপি-এর বৃহৎ অংশ মেধাজাত সম্পদ থেকে উৎপন্ন করতে হবে। জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান ও কর্মসংস্থান কমিয়ে সেবাখাতের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। তথ্য প্রযুক্তিসহ, প্রযুক্তিপণ্য ও সেবা কৃষিপণ্য, শিল্পপণ্য, গার্মেন্টস এবং সেবাখাতের রপ্তানিকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজনে এসব খাতে অর্থের যোগান দিতে হবে এবং রপ্তানি সহায়তাও করতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য হবে ডিজিটাল কমার্স। বাণিজ্যিক লেনদেন ও যোগাযোগ হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। শিল্পকারখানায় প্রয়োগ করতে হবে ডিজিটাল প্রযুক্তি।

শিল্পজ্ঞান ও মেধাভিত্তিক

শিল্পজ্ঞান ও মেধাভিত্তিকঃ জ্ঞানভিত্তিক শিল্প ও সেবার ভিত্তি হবে মেধাভিত্তিক। পূর্বোক্ত খাতসমূহে প্রযুক্তি সরবরাহ, উচ্চতর প্রযুক্তির জন্য গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিরোধ ছাড়াও রপ্তানি আয় এই খাতের অন্যতম লক্ষ্য হবে। মেধাসৃষ্টি ও সুরক্ষার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা

ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবাঃ স্বাস্থ্য সেবা, চিকিৎসা ও হাসপাতালে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করার পাশাপাশি ওষুধ প্রশাসন ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল করতে হবে। উপযুক্ত পর্যায়ে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করতে হবে। 

ডিজিটাল বিশ্ব সম্পর্কে

ডিজিটাল বিশ্ব সম্পর্কেঃ দেশীয়, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ের সকল তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রহণ ও প্রদান করতে হবে। আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ ডিজিটাল পদ্ধতিতে হতে হবে। কূটনীতিতে ডিজিটাল যন্ত্র ও ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে হবে।

ডিজিটাল পরিবহন ব্যবস্থা

ডিজিটাল পরিবহন ব্যবস্থাঃ যানবাহনের নিবন্ধনসহ, নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ডিজিটাল হবে। সকল গণবাহনের সময়সূচি ও চলাচলের তথ্য, বুকিং, অবস্থান ইন্টারনেট-মোবাইল নেটওয়ার্কে সার্বক্ষণিকভাবে পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যানবাহন চলাচল ও ট্র্যাকিং এর ক্ষেত্রে জিপিএস পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

ডিজিটাল সৃজনশীলতা

ডিজিটাল সৃজনশীলতাঃ সৃজনশীলতাকে জীবনের অংশ হিসেবে নিতে হবে এবং এর জন্য ডিজিটাল টুলস্ ব্যবহার ও প্রয়োগ করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ডিজিটাল দুনিয়াতে রাষ্ট্র ভাষাসহ বাংলাদেশের সকল ভাষার প্রচার, প্রকাশ ও বিকাশসহ বাঙালি ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক সার্বিক সমৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির নামে বাংলা ভাষা ব্যতীত এককভাবে অন্যকোনো ভাষায় কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। রাষ্ট্রকে ডিজিটাল তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তোলা ছাড়াও ডিজিটাল প্রকাশনাকে সর্বপ্রকারে উৎসাহিত ও সহায়তা করতে হবে। ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার ও প্রয়োগের জন্য বাংলা ভাষাসহ দেশের সকল ভাষার উন্নয়ন ও বিকাশে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের প্রধান জনগোষ্ঠী বাঙালি সংস্কৃতি ও সাহিত্যসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও জনগোষ্ঠীর ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশও ডিজিটাল যন্ত্রে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উল্লিখিত কর্মসূচির মধ্যেই রয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রাণ-ভোমরা।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকার কর্তৃক ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপ

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকার কর্তৃক ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপঃ প্রশাসনের সেবাসমূহ জনগণের সুবিধা, কম খরচে, দ্রুততার সঙ্গে ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কমপক্ষে একটি করে তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। বেশ কিছু সেবা এই ব্যবস্থার আওতায় এসেছে। যেমন, এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ট্রেনের আসন বিষয়ক তথ্য জানা যায়। শীঘ্রই মোবাইলের মাধ্যমে যাতে টিকেট কিনতে পারা যায় সে কাজ চলছে। কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিসেবা খাতে স্বল্প পরিসরে হলেও সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মোবাইল ফোন দেওয়া হয়েছে যাতে জনগণ সহজেই জরুরি চিকিৎসা পরামর্শ পেতে পারেন। এছাড়া সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণের কাছে কৃষি তথ্য ও সাধারণ স্বাস্থ্য পৌঁছে দিতে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সহযোগীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। দেশে ইতোমধ্যে টেলিমেডিসিনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের ই-গভর্ন্যান্স বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমেই কার্যকারিতাহীন আইসিটি এ্যাক্ট-২০০৬-কে সংশোধন করে এবং এর আওতায় এখন ডিজিটাল স্বাক্ষর কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। বিটিআরসি ইন্টারনেট ব্যান্ডউইদথের মূল্য ২৭ হাজার প্রতি এমবিপিএস থেকে ১৮ হাজারে কমিয়েছে। সরকার ২০১১ সালে নবম শ্রেণীতে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করছে। ১০০ কোটি টাকার একটি ডিজিটাল শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারের সাথে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি কাজজ করছে। শাহজালাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত পর্যায়ের ওয়াইম্যাক্স চালু করা হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক সতর্কতা

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক সতর্কতাঃ সারা দুনিয়াতেই ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের ফলে ডিজিটাল ডিভাইড তৈরি ও সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে এর প্রভাব হিসেবে বিদ্যমান ডিজিটাল ডিভাইড আরো সম্প্রসারিত হতে পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ সুবিধাভোগী, শোষকগোষ্ঠী, ধনী বা বিশেষ সম্প্রদায় গোষ্ঠীর জন্য আরো বেশি সহায়ক হতে পারে। জ্ঞানভিত্তিক সমাজে জ্ঞানহীন বা জ্ঞানী হবার সুযোগহীন মানুষের জীবনযাপন আরো কষ্টকর হতে পারে। ডিজিটাল ডিভাইড না রাখাটা ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি লক্ষ্য হতে পারে।

উপসংহার

উপসংহারঃ বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এ দেশটিতে রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে হয়ে উঠতে পারে একটি ঈর্ষণীয় সাফল্যমণ্ডিত দেশ। এর জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু কর্ম পরিকল্পনা, যোগ্য নেতৃত্ব। এজন্য প্রয়োজন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বুকে ধারণ করা। আমরা স্বপ্ন দেখি, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে কোনো মানুষ বসবাস করবে না। দেশের ন্যূনতম স্বচ্ছল মানুষ সবাই হবে। ছোট-বড় সকলেরই যোগ্যতানুযায়ী কর্মসংস্থান হবে। যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দিতে পারে, যে জাতি স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লাখ প্রাণ বিসর্জন দেয়, যে জাতি গণতন্ত্রের জন্য রাজপথ রঞ্জিত করে, সে জাতির জন্য 'ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার' লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব নয়। এ বিশ্বাস আমাদের রাখতে হবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা pdf Download

ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা pdf Download

ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা pdf Download - এই লিঙ্কে ক্লিক করে আপনি ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা pdf Download করে নিন। যাইহোক ডাউনলোড করতে কোন সমস্যা হলে আমাদের কনটেন্ট রাইটার দের সাথে যোগাযোগ করতে নিচে কমেন্ট করুন অথবা আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে যোগাযোগ করুন।

অন্যান্য আর্টিকেল !!

আমাদের শেষ কথা

এইখানে শেষ হলো আমাদের লেখা "ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা pdf Download" আমরা আশা করি "ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা pdf Download" এই আর্টিকেলটা আপনাদের উপকার হয়েছে। এই আর্টিকেলটিতে কোন ভুল তথ্য দেওয়া থাকলে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানান।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরো পড়ুনঃ