সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা
সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা - বর্তমানে নার্সদের চাহিদা অনেক। বাংলাদেশে নার্সের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। একজন নার্স মানুষকে সেবা দিয়ে থাকে সব সময়। একজন রোগীকে দেখাশোনা করা , যত্ন নেওয়া হলো নার্সের কাজ। বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করে থাকে একজন নার্স।

আজকে যারা জানতে চাচ্ছেন সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা কি তাহলে এই আর্টিকেলটা আপনার জন্য। আপনি যদি আপনার পেশা হিসেবে নার্সিং পেশাকে বেছে নেন তাহলে আপনি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বর্তমানে নার্সিং পেশা অনেক বেশি জনপ্রিয়। এবং অনেক সওয়াব পাওয়া যায় নার্সিং পেশাতে।
আরো পড়ুনঃ এল এল বি ভর্তি যোগ্যতা?
আপনি নার্সিং পেশাকে বেছে নিলে জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। যারা নার্সিং পড়তে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আমরা এই আর্টিকেলে আলোচনা করবঃ সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা, নার্সিং পড়ার যোগ্যতা, বিএসসি (BSC) সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা, ডিপ্লোমা সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা, বেসরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা, নার্সিং কোথায় পড়বেন, নার্সিং ভর্তি হতে কত টাকা লাগে, নার্সদের কাজ কি ইত্যাদি।
সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতাঃ
সরকারি নার্সিং কলেজে পড়াশুনা করার জন্য টাকা খরচ হয় না। তার জন্য আমাদের দেশের সকল শিক্ষার্থী সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি হতে চাই। তবে বেসরকারি চেয়ে সরকারি নার্সিং কলেজের মান এবং সুযোগ , সুবিধা বেশি । তাই আমরা সবাই চাই সরকারি কোন নার্সিং কলেজে পড়ার জন্য।
আরো পড়ুনঃ গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন?
সরকারি নার্সিং কলেজে পড়ার জন্য আপনার থেকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে। এর আগে আপনার থেকে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। বেসরকারি চেয়ে সরকারি নার্সিং কলেজে পড়ার জন্য অনেক যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। কারন সরকারি নার্সিং কলেজে প্রতিযোগিতা বেশি হয়ে থাকে। যে সকল শিক্ষার্থী এসএসসি (SSC) ও এইচএসসি (HSC) পরীক্ষায় ভালো পাশ করেছেন তাদেরকে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিবে। তার আগে আপনার থেকে জেনে নিতে হবে সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা সম্পর্কে। তাহলে জেনে নিন সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি পরিক্ষা দেওয়ার জন্য আপনার থেকে কি কি যোগ্যতা থাকা লাগবে।
নার্সিং পড়ার যোগ্যতাঃ
বাংলাদেশ থেকে কোন শিক্ষার্থী সরকারি নার্সিং কলেজে পড়তে চান তাহলে তার থেকে বাংলাদেশে স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি (SSC) বা সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০ পয়েন্ট থাকা লাগবে। এবং দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড থেকে এইচএসসি (HSC) পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০ পয়েন্ট থাকা লাগবে। তবে অনেক বিজ্ঞপ্তিতে এবং অনলাইনে বলা হয়েছে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ২.৫০ ও ২.৫০ থাকবে তারাও আবেদন করতে পারবেন বা পড়ার সুযোগ পাবেন। তাই এইটা সম্পূর্ন নির্ভর করবে প্রতিযোগিতার উপর। এই ছাড়াও আবেদনকারীর বয়স অনূর্ধ্ব ২২ বছর হতে হবে।

আপনি নার্সিং পড়ার জন্য বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল অনুমোদিত যেকোন সরকারি বা বেসরকারি নার্সিং কলেজ বা নার্সিং ইন্সটিটিউট থেকে পড়তে পারেন। এইগুলি থেকে আপনার বিএসসি নার্সিং এবং ডিপ্লোমা নার্সিং কোর্স শেষ করতে হবে। নিচে আলোচনা করা হলো বিএসসি নার্সিং এবং ডিপ্লোমা নার্সিং ভর্তির যোগ্যতা সম্পর্কে।
বিএসসি (BSC) সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতাঃ
বিএসসি নার্সিং কলেজে ভর্তির হওয়ার জন্য আপনার থেকে প্রথমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পাস করতে হবে। এই ছাড়াও বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়তে হবে। ন্যূনতম ৭.০০ পয়েন্ট থাকা লাগবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। এই ছাড়াও জীববিজ্ঞান বিষয়ে ভালো পাশ করতে হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩.০০ থাকা লাগবে জীববিজ্ঞান বিষয়ে।
ডিপ্লোমা সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতাঃ
ডিপ্লোমা নার্সিং কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য আপনি যেকোনো বিভাগ থেকে পড়তে পারেন। অর্থাৎ যেকোনো বিভাগ থেকে আপনি আবেদন করতে পারেন। এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ সর্বনিম্ন ৬.০০ পয়েন্ট থাকতে হবে। তবে এই এই কোর্স টি ছেলেদের জন্য নয়শুধু মাত্র ছাত্রীরা বা মেয়েরা আবেদন করতে পারবেন।
বেসরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতাঃ
আর কোন শিক্ষার্থী যদি সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি হতে না পারেন তাহলে বেসরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি হতে পারেন। এই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে ন্যূনতম এইচএসসি পাস করতে হবে। আর এসএসসি (SSC) পরীক্ষার জিপিএ নূন্যতম ৩.০০ থাকা লাগবে। এবং এইচএসসি (HSC) পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ থাকা লাগবে। দুইটা মিলে ন্যূনতম জিপিএ ৫.০০ বা ৫.৫০ থাকা লাগবে।

তবে বেসরকারি নার্সিং কলেজের চেয়ে সরকারি নার্সিং কলেজে অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেই সুবিধা গুলি আপনি বেসরকারি নার্সিং কলেজে নাও পেতে পারেন। এই ছাড়াও বেসরকারি নার্সিং কলেজে টাকা খরচ করে পড়তে হবে।
নার্সিং কোথায় পড়বেন?
দেশে বর্তমানে ২০২৩ সালে ৭ টি সরকারি নার্সিং কলেজ রয়েছে এবং বেসরকারি নার্সিং কলেজ রয়েছে ২১টি। এর পাশাপাশি দেশে রয়েছে ৪৩ টি সরকারি নার্সিং ইনিস্টিটিউট এবং ৭০ টি বেসরকারি নার্সিং ইনিস্টিটিউট। সরকারি এবং বেসরকারি সব গুলি প্রতিষ্ঠানে তিন বছর মেয়াদী বিএসসি নার্সিং এবং ডিপ্লোমা নার্সিং কোর্স করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ক্যাডেট কলেজে পড়ার খরচ?
এই ছাড়াও ব্যাচেলর অফ সাইন্স ইন নার্সিং এই কোর্সটি করতে হয় চার বছর মেয়াদী। এই ছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও নার্সিং বিষয়ক ডিপ্লোমা কোর্স করানো হয়। আপনি কোর্স সম্পন্ন করার পর যখন পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হবেন তখন একজন নার্সিংকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করতে পারবেন।
নার্সিং ভর্তি হতে কত টাকা লাগে?
নার্সিং ভর্তি হতে কত টাকা লাগে এইটা নির্ভর করে সরকারি এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উপর। প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ হবে যদি আপনি সরকারি কলেজ থেকে নার্সিং বিষয়ে পড়াশোনা করতে চান। আর তিন লক্ষ টাকা মতো খরচ হতে পারে যদি আপনি বেসরকারি কলেজ থেকে নার্সিং পড়তে চান।
তবে সরকারি কলেজের ক্ষেত্রে আরো কম টাকায় পড়া যেতে পারে এইটা নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের উপর। ঠিক বেসরকারি কলেজের ক্ষেত্রে আরো বেশি টাকা লাগতে পারে এইটা নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের উপর। আর সরকারি নার্সিং কলেজে অনেক সুবিধা রয়েছে যেইগুলো বেসরকারি কলেজে নাও থাকতে পারে।
আরো পড়ুনঃ পাইলট হওয়ার যোগ্যতা?
সবচেয়ে বড় কথা আপনার যদি মন থেকে নার্সিং পড়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনার সরকারি কলেজে ভর্তি হতে পারার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে সরকারি কলেজ গুলিতে। আর সরকারি নার্সিং কলেজে পড়ার সুযোগ না পেলে বেসরকারি কলেজে চেষ্টা করতে পারেন।

নার্সদের কাজ কি?
নার্সদের কাজ হলো একজন রোগীকে সব সময় যত্ন সহকারে রাখা, রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, ডাক্তারের নির্দেশনা মতো রোগীকে ঠিক মতো ওষুধ খাবানো, এক কথায় রোগীর দেখা শুনা করা নার্সদের কাজ। অনেক ভালো একটি কাজ। এই পেশায় সব সময় মানুষকে সাহায্য করা।
নার্সের মাসিক আয় কত?
নার্সের মাসিক আয় ৮,০০০ টাকা – ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী নার্সের সরকারি বেতন স্কেল ৮,০০০ টাকা – ১৬,৫৪০ টাকা। বেসরকারি নার্সের মাসিক আয় ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫,০০০ টাকা। তবে নার্সের মাসিক বেতন গুলো হয়ে থাকে প্রতিষ্টান এবং পরিবেশের উপর।
আরো পড়ুনঃ কিস্তিতে টাটা গাড়ি?
যেমন কিছু কিছু মেডিকেল বা হসপিটালে চাহিদা ভালো থাকে আবার কিছু কিছু মেডিকেল বা হসপিটালে চাহিদা খুবই খারাপ। বিশেষ করে গ্রামের দিকে মেডিকেল গুলির চাহিদা অনেক খারাপ থেকে সেইক্ষেত্রে নার্সের মাসিক আয় হয় ভিন্ন।
সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা - শেষ কথাঃ
এইখানে শেষ হলো আমাদের লেখা "সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা" এই আর্টিকেল টি। Technewsbangla.info এই ওয়েবসাইটের কনটেন্ট ক্রিয়েটররা চাই নতুন নতুন তথ্য এবং টিপস সবাইকে জানানো বা শেখানোর জন্য।
আপনি আমাদের এই আর্টিকেলে এতক্ষণে জেনে গেছেন সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ন তথ্য। প্রতিটা সরকারি নার্সিং কলেজে দুটি কোর্স চালু করা হয়েছে। একটি হলো ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্স আরেকটি হলো বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স।
যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছেন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তারা শুধু মাত্র বিএসসি নার্সিং কোর্স করতে পারবেন। আর ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্স করতে পারবেন বিজ্ঞান , মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা।
সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা এই আর্টিকেলে কোন ভুল তথ্য থাকলে আমাদের ক্ষমা করবেন এবং নিচে "Add Comment" এই লেখাতে ক্লিক করে আমাদের জানান। ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ।
Thanks For Article.
অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান কমেন্ট টি করার জন্য। ভালো থাকবেন।