মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার - বর্তমানে মহিলারা কোমর ব্যথা যন্ত্রনায় বেশি ভোগে। বেশির ভাগই দেখা যায় গর্ভধারণের পর থেকে মহিলাদের কোমর ব্যথা বেশি হয়ে থাকে। এই ছাড়াও ২৫-৩০ বছর বয়সের মহিলারা বেশির ভাগই কোমর ব্যথায় ভোগে। গবেষনায় দেখা গেছে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে কোমরে ব্যথা বেশি হয়।

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

তার জন্য মহিলাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। আমরা আজকে আলোচনা করেছি মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। আপনি আমাদের এই আর্টিকেলটা শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেনঃ মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ, মেয়েদের কোমর ব্যথার কারণ, কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার কারণ, কিভাবে বুঝবেন সায়টিকার ব্যথা, কোমরের বাম পাশে ব্যথার কারণ কি, মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় কোমর ও পিঠ ব্যথার কারণ, গর্ভকালীন, কোমর ব্যথার সহজ সমাধান, কোমর ব্যথার ব্যায়াম, কোমর ব্যথার ওষুধের নাম, কোমর ব্যথার খাবার, কোমর ব্যথার চিকিৎসা, কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে।

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ

একজন মহিলার গর্ভধারণের শুরুতেই কিছু হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে রিলাক্সিন হরমোন এবং প্রজেস্টেরন সন্তান জন্মদানের প্রস্তুতি হিসেবে কোমরের বিভিন্ন লিগামেন্টসকে এবং জয়েন্ট নরম এবং ঢিলা করে দেয়। এর ফলে মহিলারা নিচ থেকে কোন কিছু তোলার সময় ব্যথা অনুভূত করে এবং ভার বহন ক্ষমতা কমে যায়।

কোমর ব্যথার যন্ত্রণায় বেশি ভুগে মহিলারা। পুরুষের চাইতে মহিলাদের কোমর ব্যাথা বেশি হয়ে থেকে। তার কারন হলো একজন মহিলা বা নারী বিয়ে করার পর তার ওজন অনেকটা বেড়ে যায়। আর এই অতিরিক্ত ওজনের কারণে মহিলাদের কোমরের মাংসপেশি এবং হাড়ের ওপর চাপ বেশি পরে। তাই মহিলাদের কোমর ব্যথা হয়ে থাকে।


মহিলাদের বয়সের সাথে সাথে কোমর ব্যথা বেড়ে যায়। মহিলাদের কোমর ব্যথা বেশি হয়ে থাকে ২৫ - ৪০ বছর পর থেকে। অনেক সময় দেখা যায় মহিলারা তাদের বাচ্চা কে সময় দেওয়ার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম এবং কায়িক শ্রম এর অভাবে পেট ও পিঠের মাংসপেশি চাপ ধরে যায়।

মহিলাদের বেশির ভাগই শারীরিক সমস্যা থেকে কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। এই ছাড়াও মহিলাদের লিগামেন্ট, জোড়ার আবরণ, পেশি, হাড়, জোড়া, ডিস্ক ইত্যাদি এই শারীরিক সমস্যা গুলি হয়ে থাকে।


মহিলাদের কোমরের ব্যথার সাথে সাথে বেশির ভাগ সময় বুক, পেট ও তলপেটের মধ্যকার, স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি এই বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা হয়ে থাকে।

এই ছাড়াও অনেক মহিলারা অফিসে অনেক সময় নিয়ে কাজ করে থাকে। অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা মহিলাদের কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ। এই ছাড়াও অনেক মহিলারা দীর্ঘক্ষণ বাইক বা দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিং করার কারনে এই সমস্যায় ভুগে।

অনেক মহিলা আছে শুয়ে বা কাত হয়ে গান শুনে থেকে বা বই পড়ে থাকে যার ফলে মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মহিলারা বেশি ভারী জিনিস বহন করে থাকলে কোমর ব্যাথার এই সমস্যা দেখা দেয়।

মেয়েদের কোমর ব্যথার কারণ

কোমর ব্যথার অনেক কারন রয়েছে। আমরা আমাদের জীবন ও জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকি। যেসব মহিলা বেশি কায়িক পরিশ্রম করে তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দেয়। তাই আমাদের এমন কিছু করা উচিত না যেই কাজ করলে আমাদের শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গের এবং কোমরের উপর চাপ পড়ে।


১. মেয়েরা গর্ভবতী হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ এবং কোমর সহ ব্যাথা করে।
২. মাথা নিচু করে কাজ করলে বা ঝুকিয়ে কাজ করলে কোমর ব্যাথা হয়ে থাকে।
৩. মহিলাদের মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে কোমর ব্যথা হতে পারে।
৪. মহিলারা অধিক পরিশ্রম করে থাকলে এই ব্যাথা অনুভব করে।
৫. মেয়েদের মেনস বন্ধ হয়ে গেলে কোমর ব্যথা হতে পারে।
৬. বসে সময় কাটালে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
৭. যেসব মহিলাদের শরীর যদি ভারী হয় তাহলে তাদের কোমর ব্যাথা হতে পারে।
৮. মহিলাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের হাড়ের ক্ষয় শুরু হয় ফলে কোমর ব্যাথা হয়ে থাকে।
৯. গর্ভপাতের পরের কোমরে ব্যথা হতে পারে।
১০. ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কম খেলে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
১১. সুসম খাবারের অভাব দেখা দিলে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
১২. বসার চেয়ার ঠিকঠাক না হলে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
১৩. অতিরিক্ত ভারি মালামাল বহন করার কারনে কোমর ব্যাথা হয়ে থাকে।
১৪. মহিলাদের শারীরিক সমস্যা থেকে কোমর ব্যথা হয়ে থাকে।
১৫. যেইসব মহিলা ২৫ থেকে ৪০ বছর হয়ে থাকে তাদের কোমর ব্যাথা হয়ে থাকে।

কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার কারণ

কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার একটি কারন হলো বেশি পরিশ্রম করা বা কষ্ট করা। অনেক সময় বেশি হাঁটলে বা দৌড়াদৌড়ি করলে কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা হয়ে থাকে। দীর্ঘতম স্নায়ু সায়টিকা নার্ভের ওপর চাপ অথবা আঘাত হলে কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা হয়ে থাকে। সায়টিকা আমাদের শরীরের দীর্ঘতম স্নায়ু বা নার্ভ। আমাদের শরীরের কোমরের পেছনের দুদিকের দুটি সায়টিকা নার্ভ থাকে। শরীরের সায়টিকা নার্ভে চাপ পড়লেই কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা শুরু হয়।

কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার কারণ

এই ব্যথার কারনে কষ্টে হাঁটাচলা করাই খুবই মুশকিল। পুরুষের চেয়ে মেয়েরা এই কষ্টে বেশি ভুগে। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের সায়টিকার ব্যথা বেশি হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলে ২০ বছরের কম বয়সীদের সায়টিকার ব্যথা অনেক কম হয়ে থাকে এককথায় না হয় বললেই চলে। বিজ্ঞানীরা আরো বলেছেন ৩০ বছর হওয়ার পর থেকে মহিলারা কোমর ও পায়ের ব্যথায় বেশি কষ্ট পান।

কিভাবে বুঝবেন সায়টিকার ব্যথা?

সায়টিকার ব্যথার প্রধান কারণ নার্ভে চাপ লাগা। যখন আপনার কোমর ব্যথা শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে এই ব্যাথা নিচের দিকে নেমে যায় তখন বুজবেন এইটি সায়টিকার ব্যথা লক্ষণ। অর্থাৎ কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা হওয়াকে সায়টিকার ব্যথা বলা হয়ে থাকে। 


এই ব্যথা আরো বেশি হতে থাকে যখন আপনি বসে বসে কাজ করবেন। বেশি বেশি হাঁটলে এই ব্যথা হয়ে থাকে। সায়টিকার ব্যথা হওয়ার কারনে হাঁটা চলা করতে অসুবিধে হয়।

অনেক সময় বর্তমানে আপনি দেখে থাকবেন আমাদের অনেক স্মার্ট ভাইরা শখের কারনে বা কোন না কোন কারনে তাদের পকেটের পিছনে অনেক বড় বড় বা বেশি ওজনের ওয়ালেট ব্যাবহার করে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলে থাকে ওয়ালেটের ওজন বেশি হলেও সায়টিকার ঝুঁকি হয়।

কোমরের বাম পাশে ব্যথার কারণ কি?

বিভিন্ন কারনে কোমরের বাম পাশে ব্যথা হয়ে থাকে। আমাদের শরীরের বাম দিকে অনেক অঙ্গের অংশ রয়েছে। আমাদের শরীরে বাম দিকে অঙ্গের কোন ক্ষতি হলে বা কোন সমস্যা হলে কোমরের বাম পাশে ব্যথা হয়ে থাকে।


মহিলাদের শরীরের কোমরের বাম পাশের দিকে অনেক অঙ্গ থাকে এই ছাড়াও ডিম্বাশয় অবস্থিত। কোমরের বাম পাশে ব্যথার কারণ নিচে দেওয়া হলোঃ

  • গর্ভধারণ
  • অস্টিওপোরসিস
  • সায়াটিকা
  • কাডা ইকুইনা সিনড্রোম
  • ডিম্বাশয় সিস্ট
  • কিডনিতে পাথর
  • আলসার
  • ডাইভারটিকুলসিস
  • অন্যান্য

মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় কোমর ও পিঠ ব্যথার কারণ?

মহিলাদের বেশির ভাগই মাসিকের সময় কোমর ও পিঠ ব্যথা হয়ে থাকে। মহিলারা ভালো ভাবে বুঝতে পারে মাসিকের সময় তাদের কোমর ও পিঠ ব্যথা। মাসিকের সময় মহিলারা শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে যায়। এই ছাড়াও মহিলাদের বমি বমি ভাব হয়, পেটে ব্যথা হয় এবং তাদের বিরক্তিকর মেজাজ হয়।

মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় কোমর ও পিঠ ব্যথার কারণ?

মহিলাদের এই সব শারীরিক সমস্যা কারনে কোমর ও পিঠ ব্যথা হয়ে থাকে। মাসিকের সময় কোমর ও পিঠ ব্যথার কারণ গুলো হলোঃ

১. ডিম্বাশয় থেকে ডিম ছাড়ার সময়।
২. এন্ডোমেট্রিওসিস এর কারনে।
৩. সঠিক খাবার না খেলে।
৪. বেশি বেশি পানি পান না করলে।
৫. শরীরের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারনে।
৬. ইউরেট্রাল প্রাচীর তৈরি করার সময়। এটি তৈরি করে থাকে জরায়ুতে সিস্টের এই নন-কার্সিনোজেনিক বৃদ্ধি।

মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় পিঠে ব্যথার লক্ষণগুলি

১. ক্লান্তি।
২. পায়ে ব্যথা।
৩. ডায়রিয়ার অভিযোগ।
৪. অজ্ঞান হয়ে পড়া। 
৫. মাথা ব্যথা হওয়া ।
৬. বমি বা মলত্যাগ। 
৭. পেটে ব্যথা ।
৮. বমি বমি করা।
৯. যৌন মিলনের সময় ব্যাথা।
১০. প্রস্রাবের সময় ব্যথা।

মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথার চিকিৎসা

অনেকে মহিলারা কোমর ব্যথার কারনে ওষুধ খেয়ে থাকে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া। মহিলাদের পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা হলে ওষুধ খাওয়া উচিত না। তার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় আছে। তাহলে জেনে নিন মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথার চিকিৎসা সম্পর্কে।


১. গরম জলের ব্যবহার করা বা খাওয়া
২. আদা ব্যবহার / খাওয়া
৩. দই খাওয়া
৪. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন

গরম জলের ব্যবহার করা বা খাওয়া

মাসিকের বা পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা হোক বা না হোক সকল মহিলাদের উচিত মাসিকের সময় গরম জল খাওয়া। গরম জল ব্যথা হ্রাস করে এবং জরায়ুর পেশীগুলিকে স্বস্তি দেয়।

অথবা আপনি চাইলে আপনার কোমরে পাশে রাবার ব্যাগ বা বোতলে গরম জল ভরে চেক দিতে পারবেন। এতে আপনি অনেকটা ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।

আদা ব্যবহার / খাওয়া

মাসিকের সময় মহিলাদের আদা খাওয়া উচিত। এর ফলে মাসিক বা পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়। এক টুকরো আদা নিয়ে গরম পানিতে ভালো করে সিদ্ধ করে খেতে পারেন।

দই খাওয়া

মহিলাদের মাসিকের সময় দই খাওয়া উচিত। দই খাওয়ার ফলে মাসিক বা পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়। প্রচুর পুষ্টি রয়েছে দইয়ের মধ্যে।

পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন

পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ার ফলে মহিলাদের মাসিকের সময় কোমর ব্যথা হ্রাস পায়। তার জন্য আমাদের উচিত বেশি বেশি সবুজ শাক সবজি, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার এবং ফলমূল খাওয়া।

গর্ভকালীন কোমর ব্যথার সহজ সমাধান

গর্ভধারণের সময় মহিলাদের বেশির ভাগই কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের পর মহিলাদের কোমর ব্যথায় বেশি হয়ে থাকে।

অনেক গবেষনায় দেখা গেছে শতকরা ৫০ থেকে ৭০ ভাগ কোমর ব্যথায় বেশি ভোগেন গর্ভবতীই মহিলারা। কিন্তু এই ব্যথা অনেক সময় এমনি এমনি চলে যায়। তবে অনেক সময় গর্ভধারণের শেষ দিকে কোমর ব্যথা সম্পূর্ন চলে যায়।


গর্ভকালীন সময় মহিলাদের ওজন অনেক বেড়ে যায়। গবেষনায় দেখা গেছে গর্ভকালীন সময় মহিলাদের ওজন ১২ থেকে ১৮ কেজি বেড়ে যায়। যার ফলে মহিলাদের মেরুদণ্ডের ওপর চাপ পড়ে। যার কারনে মহিলাদের কোমরের ব্যথা হয়ে থাকে। তাহলে জেনে নিন গর্ভকালীন কোমর ব্যথার সহজ সমাধানঃ

১. প্রতি সপ্তাহে ৩ দিন করে ১২ সপ্তাহ ব্যায়াম করা। ( গর্ভকালীন সময় মহিলাদের বেশি ব্যায়াম এবং পরিশ্রম করা উচিত না )।
২. হাল্কা ব্যায়াম করা যেমন হাঁটতে পারেন।
৩. সাইক্লিং করা ( যদি সম্ভব হয় )।
৪. যেসব ব্যায়াম করলে পেটের ওপর বেশি চাপ পড়ে এইগুলি থেকে বিরত থাকুন।
৫. গরম বা বরফ ছ্যাঁক। ( বরফ কম ব্যাবহার চেষ্টা করবেন )।
৬. দুই-তিন দিন পর পর গরম ছ্যাঁক ব্যাবহার করবেন।
৭. সাবধান পেটে কিন্তু ছ্যাঁক দিবেন না।
৮. সোজা হয়ে হাঁটবেন।
৯. বসার সময় কোমর সোজা করে বসুন।
১০. দুই হাঁটুর ফাঁকে একটি বালিশ দিন ঘুমানোর সময়।
১১. চিৎ হয়ে কখনো ঘুমাবেন না।
১২. ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমান।
১৩. নিচ থেকে কোন জিনিস তুলার সময় বসে তুলবেন, ঝুঁকবেন না।
১৪. মজার বই পড়ুন।
১৫. গান শুনতে পারেন। ( গান শুনা একজন মুসলমানের জন্য হারাম একটা কাজ । মুসলমানদের উচিত গান শুনা থেকে বিরত থাকা । তার জন্য বেশি বেশি ইসলামীক গল্প শুনতে পারেন, ওয়াজ শুনতে পারেন ইত্যাদি )।
১৬. মানসিক চাপ মুক্ত রাখার জন্য চেষ্টা করুন। তার জন্য আড্ডা দিতে পারেন, বই পড়তে পারেন, ইসলামিক গল্প বা ওয়াজ শুনতে পারেন।
১৭. এই সময় স্বামীর উচিত স্ত্রীকে হাসি-খুশি রাখার।

কোমর ব্যথার ব্যায়াম

কোমর ব্যথার জন্য আপনি অনেক রকমের ব্যায়াম করতে পারেন। তার মধ্যে আমরা নিচে খুব কম ব্যায়াম করার সম্পর্কে আলোচনা করেছি।


১. নরম বিছনায় শুয়ে দুই পা এবং দুই হাত শরীরের দুই পাশে সোজা করে শুতে হবে।
২. এরপর "এক" পা ওপরের দিকে তুলুন এই সময়ে হাঁটু ভাঁজ করবেন না।
৩. ১০ সেকেন্ড পা ওপরের দিকে তুলে এই ব্যায়াম করবেন।
৪. এই ভাবে আরেকটি পা উপরে তুলে ১০ সেকেন্ড রাখুন।
৫. এরপর দুই পা একসাথে তুলে একই ব্যায়াম করুন।
৬. এরপর হাত দিয়ে দুই পা একসাথে আপনার বুকে অনার বা লাগানোর চেষ্টা করুন।
৭. এরপর দুই পা সোজা করে পায়ের পাতার দিকে সটান করে ১০ সেকেন্ড রাখুন।
৮. এই ব্যায়াম গুলো ১০ সেকেন্ড করে করার চেষ্টা করুন। ১০ সেকেন্ড এর বেশি করার দরকার নেই।

কোমর ব্যথার ওষুধের নাম

কোমর ব্যথার ওষুধের নাম বলার আগে আপনাকে বলব আপনি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ব্যথার ওষুধ খাবেন না। এইটা একটি মারাত্বক ভুল কাজ। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

কোমর ব্যথার ওষুধের নাম

লিনডাক (Lindak), অনাফকেক্স (anaflex), রেলাএক্স (relaxo), এবং ক্যালবো ডি (calbo d) এই ওষুধ গুলি খেতে পারেন কোমর ব্যথা হলে। আমরা অনলাইন থেকে সংগ্রহ করে আমাদের বললাম কোমর ব্যথার ওষুধের নাম গুলি। এর জন্য আমরা কোনভাবে দায়ী নয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

কোমর ব্যথার খাবার

কোমর ব্যথার জন্য নিয়মিত খাবার খাওয়া উচিত। তবে এমন কিছু খাবার আছে যেই খাবার গুলি কোমর ব্যথার জন্য অনেক উপকারী। জেনে নিন কি কি খাবেনঃ


১. গরম পানি খাওয়া বা ছেক দেওয়া কোমর ব্যথার জন্য সবচেয়ে উপকারী। এরপর কোমর ব্যথার জন্য আদা খাওয়া অনেক উপকারী।

২. প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে আদাতে। আমাদের শরীরে পটাশিয়ামের অভাবের ফলে নার্ভের সমস্যা হয়। ফলে কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। নিয়মিত আদা খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৩. হলুদ এবং দুধ একসাথে মিশিয়ে খেলে কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৪. দুধের সাথে মেথী বীজের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন এরপর যেই জায়গায় ব্যথা ঐ জায়গায় লাগিয়ে নিন।

৫. লেবুর শরবত খেতে পারেন এতে ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি কোমরের ব্যথা কমিয়ে দেই।

৬. অ্যালোভেরা শরবত প্রতিদিন নিয়মিত খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৭. ব্যথার সময় ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।

৮. ফল, শাকসবজি, দুধ, ঘী, বাদাম ইত্যাদি ( ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় ) খাবার খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

কোমর ব্যথার চিকিৎসা

কোমর ব্যথা এইটি অনেক কষ্টকর একটি ব্যথা। এই ব্যথাটি সহজে যেতে চাই না। কোমর ব্যথার জন্য আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। যদি আপনি চিকিৎসা মাধ্যমে কোমর ব্যথা ভালো করতে চান তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নেন। ডাক্তার আপনাকে কিছু এক্সরে করতে বলবে। এবং কিছু ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারে। কখনো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ব্যথার ঔষধ খাবেন না। এতে অনেক বিপদ বেড়ে যাবে। নিচে দেওয়া আছে কোমর ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়।

কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায়

নিরাময় করা এবং কোমরের নড়াচড়া স্বাভাবিক করা হলো কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায়। কোমর ব্যথা দুর করার জন্য অনেক নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাহলে জেনে নিন কোমর ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়। তার আগে বলি কোমর ব্যথার জন্য কিছু খাবার খেতে হয় এইগুলি উপরে আলোচনা করা হয়েছে।


১. দীর্ঘক্ষণ সময় কাজ না করা।
২. একটু পর পর নিজে কে বিশ্রাম দেওয়া।
৩. কোথায় একটানা বসে না থাকা।
৪. টেবিলে বা চেয়ার বা যেকোনো জায়গায় একটানা বসে না থাকা।
৫. মাঝে মাঝে হাঁটা।
৬. নিচু স্থানে না বসা।
৭. কোমর ভাঁজ হয়ে যাবে এমনভাবে না বসা।
৮. বেশি নরম কোন বিছনায় না শোয়া।
৯. ভারি বস্তু বহন থেকে বিরত থাকুন।
১০. রাতে ঘুম যাওয়ার সময় এক কাথে বেশি সময় ধরে না শুয়া।
১১. একঘেয়েমি কাজ থেকে বিরত থাকুন।
১২. গরম সেঁক দেওয়া।
১৩. পেশি শক্তিশালী এবং নমনীয় হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।
১৪. কাজের জায়গা ঠিক করতে হবে।
১৫. ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে বসার চেষ্টা করুন।
১৬. হাঁড়ের পুষ্টির জন্য খাবার খান।
১৭. ঘুমানোর পজিশন ঠিক করুন।
১৮. যোগব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।
১৯. মানসিক ভাবে ফিট থাকার চেষ্টা করুন।
২০. বই পড়ুন, ইসলামীক গল্প শুনুন, নামাজ পড়ুন, আড্ডা দিন। এতে আপনার মন ভালো থাকবে।

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার - শেষ কথাঃ

এইখানে শেষ হলো আমাদের লেখা "মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার" এই আর্টিকেলটা। Technewsbangla.info এই ওয়েবসাইটের কনটেন্ট ক্রিয়েটররা চাই নতুন তথ্য এবং টিপস সবাইকে জানানো বা শেখানোর জন্য।

আমরা আলোচনা করেছি মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। আমরা আশা করি মহিলাদের কোমর ব্যথার সম্পর্কে এই আর্টিকেলটা আপনাদের অনেক উপকার হয়েছে। কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায় এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে আপনাদের কাছে একটি অনুরুদ আপনাদের বন্ধুদের মাঝে অথবা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে আমাদের সাহায্য করুন।

কোমর ব্যথার চিকিৎসা এই আর্টিকেলে কোন ভুল তথ্য থাকলে নিচে "Add Comment" এই লেখাতে ক্লিক করে আমাদের জানান।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরো পড়ুনঃ